সিম রিপ্লেসমেন্ট করার সহজ কিছু নিয়ম
সিম রিপ্লেসমেন্ট করার সহজ কিছু নিয়ম যা আপনাকে জটিলতা এড়াতে সাহায্য করবে। আজকে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে সিম রিপ্লেসমেন্ট করার কিছু সহজ নিয়ম এবং সিম রিপ্লেসমেন্ট কেন করবেন ও সিম রিপ্লেসমেন্ট করতে কি কি লাগে এসব তুলে ধরব।
আপনি হয়তো জানেন না যে পুরনো সিম, হারিয়ে যাওয়া সিম বা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সিম রিপ্লেসমেন্ট করে ব্যবহার করা যায়। আশা করি আজকের পোস্টটি পড়ে সিম রিপ্লেসমেন্ট ও হেতুক ঝামেলা বা জটিলতা এড়াতে পারবেন। তাহলে চলুন সিম রিপ্লেসমেন্ট করার সহজ কিছু নিয়ম জানা যাক
পোস্ট সূচিপত্রঃ সিম রিপ্লেসমেন্ট করার সহজ কিছু নিয়ম
- সিম রিপ্লেসমেন্ট করার সহজ কিছু নিয়ম
- সিম রিপ্লেসমেন্ট কেন করবেন?
- সিম রিপ্লেসমেন্ট করতে কি কি লাগে?
- সিমের মালিকানা পরিবর্তন করতে যা লাগবে
- সিম রিপ্লেসমেন্ট করার সুবিধা ও অসুবিধা
- গ্রামীন সিম রিপ্লেসমেন্ট করার নিয়ম
- বাংলালিংক সিম রিপ্লেসমেন্ট এর নিয়ম
- রবি সিম রিপ্লেস করার নিয়ম
- এয়ারটেল সিম রিপ্লেস করার নিয়ম
- টেলিটক সিম রিপ্লেসমেন্টের নিয়ম
- শেষ কথাঃ সিম রিপ্লেসমেন্ট করার সহজ কিছু নিয়ম
সিম রিপ্লেসমেন্ট করার সহজ কিছু নিয়ম
বর্তমান ডিজিটাল যুগে সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন। আর ফোনে এক বা একাধিক সিম কার্ড
রয়েছে। দেখা যায় একজনের কাছে দুই বা ততোধিক সিম কার্ড লক্ষ্য করা যায়। এর মূল
কারণ হলো সিম রিপ্লেসমেন্ট না করা। অনেক সময় অনেক পুরাতন সিম কার্ড রয়েছে
যেমন ২ জি,৩ জি এগুলোতে তেমন ভালো নেট পায় না। তাই অনেকে সিম রিপ্লেসমেন্ট করা
ঝামেলা মনে করায় নতুন সিম কিনে বসে। কিন্তু সিম রিপ্লেসমেন্ট করলে ভালো অফার
সমূহ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অনেকেই সিম রিপ্লেসমেন্ট সম্পর্কে তেমন কিছু না জানায় ভোগান্তির শিকার হন। ভোগান্তি গুলো হল নেটওয়ার্ক কম পায়, কথা বলতে গেলে কথা কেটে কেটে যায় আবার অনেক সময় নেট না পাওয়ার কারণে ফোন বন্ধ দেখায়। কিন্তু সিম রিপ্লেসমেন্ট মাধ্যমে গ্রাহকের ইন্টারনেটের গতি আগের তুলনায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে এবং দুর্দান্ত অফার পাওয়া সম্ভব যেমন দ্রুতগতির নেটওয়ার্ক।
সিম রিপ্লেসমেন্ট করার পর আগের চাইতেও বেশি স্বাচ্ছন্দে কথা বলতে পারবেন প্রিয়
মানুষগুলোর সাথে আর সাথে তো থাকছে দুর্দান্ত সুবিধা। সিম রিপ্লেসমেন্ট করার আগে
কথা বলার সময় ভোগান্তি পোহাতে হত-নেটওয়ার্কিং প্রবলেম, কথা বলার সময় কল
কেটে যাওয়া, অনেক সময় নেটওয়ার্ক না পেলে ফোন বন্ধ দেখায়। তাই ফোন
রিপ্লেসমেন্ট করা জরুরী তাতে আপনার ভোগান্তি শেষ হবে এবং অনেক সুবিধা ভোগ করতে
পারবেন।
অনেকেই আবার মনে করেন নতুন সিম কিনলে ঝামেলা হবে ভেবে পুরনো সিমই ব্যবহার করেন।
এতে করে গ্রাহক নেটওয়ার্কিং সমস্যার বেড়াজালে পড়ে থাকেন এবং বিভিন্ন
সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। তাই আপনার যে কয়টা সিম থাকুক না কেন রিপ্লেস করে ঝামেলা
মুক্ত হন। তাহলে চলুন সিম রিপ্লেসমেন্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক-
আরো পড়ুনঃ ফ্লেক্সিলোড ব্যবসা করার গাইড লাইন
সিম রিপ্লেসমেন্ট কেন করবেন?
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে আমি কেন সিম রিপ্লেস করব। আসলে সিম রিপ্লেস করা
গ্রাহকদের ইচ্ছা ওপর নির্ভরশীল। তবে আপনার সিম হারিয়ে গেছে, নষ্ট হয়ে
গেছে বা অকেজো হয়ে গেছে। সেই সিম আর ব্যবহার করতে পারছে না কিন্তু আপনার সিমের
নাম্বারটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দেওয়া আছে। তাহলে আপনাকে সিম রিপ্লেস করতে
হবে। এটাই একমাত্র সমাধন।
সিম রিপ্লেসমেন্ট একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে পুরাতন সিমকে নতুন রূপ দেওয়া
বা আপডেট করে নতুন প্রযুক্তির সাথে রিনিউ করতে পারবেন। ধরুন আপনার অনেক
পুরনো একটা মোবাইল আছে সাথে আছে সিম কার্ড কিন্তু মোবাইলটা নষ্ট হওয়ায় নতুন
মোবাইল কিনেছেন। মোবাইল কেনার পর সেই পুরনো সিম কার্ড আর হচ্ছে না।আর এই সমস্যার
সমাধান হচ্ছে সিম রিপ্লেসমেন্ট যেখানে আপনি পুরনো সিম দিয়ে হুবহু একই
নাম্বার আরেকটু আপডেটেড সিম কার্ড পেয়ে যাচ্ছেন।
সিম রিপ্লেসমেন্ট করতে কি কি লাগে?
- সিম রিপ্লেসমেন্ট করতে তেমন কিছু প্রয়োজন নেই তবে অল্প কিছু টাকা খরচ হতে পারে। আর
- আপনার এনআইডি কার্ড বা এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
- হারিয়ে যাওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়া অথবা অকেজো হয়ে যাওয়া সিম কার্ড
- যে ব্যক্তির নামে সিম বায়োমেট্রিক্স করা ছিল অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে কাস্টমার কেয়ারে উপস্থিত থাকতে হবে।
সিমের মালিকানা পরিবর্তন করতে যা লাগবে
সিম রিপ্লেসমেন্ট করতে যা লাগে, সেইসব জিনিসই লাগবে সিমের মালিকানা
পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে। এইখানে উক্ত ব্যক্তির হাতের ছাপ নিয়ে একটি পিন কোড বের
করতে হবে এবং কাস্টমার কেয়ারে থাকা কর্মীদের মাধ্যমে পুরনো
মালিকানা সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে হবে। তারপর নিজের নামে সিম নিবন্ধন করতে
হবে এবং বায়োমেট্রিক্স করে নিতে হবে। এতে আপনার খরচ হতে পারে ২৫০ থেকে ৩০০
টাকা।
সিম রিপ্লেসমেন্ট করার সুবিধা ও অসুবিধা
সিম রিপ্লেসমেন্ট করার কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। সুবিধা গুলো হলঃ
- সিম রিপ্লেসমেন্ট করে আপনি 4G এবং 5G সেবা সমূহ গ্রহণ করতে পারবেন
- আপনি দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন
- নেটওয়ার্কের কোন ঝামেলা বা অসুবিধা হবে না
- আপনি একই সিমের ডুবলিকেট কপি পেয়ে যাচ্ছেন
- অনেক সিম কোম্পানি অনেক সময় রিপ্লেসমেন্ট করা সিমে অফার দিয়ে থাকে আপনি সে অফার গুলো উপভোগ করতে পারবেন
- আপনাকে পুরনো নাম্বার খোঁজার জন্য অসুবিধায় পড়তে হবে না
অসুবিধা গুলো হলোঃ
সিম রিপ্লেসমেন্ট করার ক্ষেত্রে তেমন কোন অসুবিধা নেই। তবে অসুবিধা হতে পারে সিমটি যদি নিজের নামে নিবন্ধিত না হয়। আজকাল বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে সিম মালিকানা করা হয় তাই গ্রাহকের নামে সিমটি নিবন্ধিত না থাকলে সিমটি পুনরায় বায়োমেট্রিক্স করে হাতে ছাপ দিয়ে পুনরায় গ্রাহকের নামে ট্রান্সফার করে নিতে হবে। এতে গ্রাহকের খরচ একটু বেশি হতে পারে। এতে গ্রাহককে গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে(কাস্টমার কেয়ার) গিয়ে সিমটি গ্রাহকের নামে পরিবর্তন করে নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ কোন সিমে নেট অফার বেশি দেয়
গ্রামীন সিম রিপ্লেসমেন্ট করার নিয়ম
আপনি যদি গ্রামীন সিমের গ্রাহক হন তাহলে আপনাকে উল্লেখিত নির্দেশনাগুলো মেনে কাজ করবেন আপনি প্রথমে নিকটস্থ ফ্লেক্সিলোড দোকান বা কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে যোগাযোগ করবেন যে আপনার সিমটি রিপ্লেস করা যাবে কিনা। তবে বিনামূল্যে বা অফারে প্রতিস্থাপন করতে হলে আপনাকে *458*44* আপনার নাম্বার দিয়ে # দিন। পরে তারা আপনাকে মেসেজ দিয়ে জানাবে যে আপনার সিমটি গ্রামীনে অফারে প্রতিস্থাপন করা যাবে কিনা।
গ্রামীন সিম রিপ্লেস করতে সাধারণত ২০০ থেকে ৩০০ টাকা খরচ হতে পারে। তবে মাসে
নির্দিষ্ট টাইমে গ্রামীন সিম কোম্পানি একটা সুযোগ দিয়ে থাকে এতে কোন টাকা পয়সা
খরচ হয় না বিনামূল্যে সার্ভিস নিতে পারবেন।
বাংলালিংক সিম রিপ্লেসমেন্ট এর নিয়ম
আপনি যদি বাংলালিংক গ্রাহক হয়ে থাকেন তাহলে শুরুতে আপনাকে জানতে হবে যে আপনার সিমটি অফারে প্রতিস্থাপন করা যাবে কিনা। এজন্য আপনাকে ডায়াল করতে হবে *৫০০০*৪০। এর মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন আপনার সিমটি বিনামূল্যে প্রতিস্থাপনের যোগ্য কিনা। মাসের নির্দিষ্ট টাইমে বাংলালিংক এই সেবা দিয়ে থাকে। অথবা আপনি মেসেজ অপশনে গিয়ে Free 4G লিখে ২৫০০ নাম্বারে পাঠিয়ে দিন। বাংলালিংক কাস্টমার কেয়ারের কর্মীরা মেসেজ দিয়ে আপনাকে জানিয়ে দিবে।
আর না হলে নিকটস্থ কোন কাস্টমার কেয়ার অথবা বায়োমেট্রিক্স রিটেলার
পয়েন্টে গিয়ে যোগাযোগ করতে পারেন। এইখানে একই কাগজপত্র লাগবে। তবে যদি জানতে
চান বাংলালিংক সিম রিপ্লেস করতে কত টাকা লাগবে। তবে বলে রাখা ভালো রিপ্লেস করতে
২০০ থেকে ৩০০ টাকা খরচ হতে পারে।
রবি সিম রিপ্লেস করার নিয়ম
রবি সিম রিপ্লেস করতে হলে আপনাকে প্রশ্ন কোন রবি সিম বিক্রেতার দোকানে গিয়ে
এইটুকু সিওর হবে যে আপনার সিম রিপ্লেস হবে কিনা। যদি সিমটি হারিয়ে বা অকেজ হয়ে
যায় তাহলে আপনি কাস্টমার পয়েন্টে গিয়ে আপনি একটি প্রতিলিপি বা কপি
তুলতে পারবেন। এছাড়াও আপনি রবি ডোরস্টপ থেকে সার্ভিসটি নিতে পারবেন। এজন্য
আপনাকে রবি নিজস্ব ওয়েবসাইটে গিয়ে একটা অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
একাউন্ট হয়ে গেলে এখানে বিভিন্ন ধরনের অফারের মধ্যে সিম প্রেসিডেন্ট অপশন দেখতে
পাবেন। এখানে যাবতীয় তথ্য দিয়ে ঘরে বসেই করে ফেলুন সিম রিপ্লেসমেন্ট।
তবে ডোরস্টপ সার্ভিসটি নিতে হলে আপনাকে চার্জ দিতে হবে। এখানে সাধারণত
২৫০ থেকে ৩০০ টাকা খরচ হতে পারে।
এয়ারটেল সিম রিপ্লেস করার নিয়ম
রবির মত এয়ারটেলও ডোর স্টপ সার্ভিসটি চালু হয়েছে। আপনি ঘরে বসেই এয়ারটেল
সিম অফারে প্রতিস্থাপন করতে পারবেন। এছাড়াও কাস্টমার কেয়ারে বা সিম বিক্রয়
দোকানে একই সেবা দেওয়া হয়। আরো বিস্তারিত জানতে এয়ারটেল ওয়েব সাইটে
ভিজিট করুন। এখানে এয়ারটেল সিম প্রতিস্থাপন খুঁটিনাটি বিষয় সবকিছু জানতে
পারবেন।
তবে এয়ারটেল সিমে আরও একটি বড় সুবিধাহ হচ্ছে এর মাধ্যমে আপনি আপনার 2G ও 4G
সিম দিয়েই ফোরজি ব্যবহারকারীদের অফার ব্যবহার করে ইন্টারনেট প্যাকেজ
উপভোগ করতে পারবেন খুব সহজে। তাই দেরি না করে এখনি আপনার সিম রিপ্লেস করুন এবং
উপভোগ করুন দ্রুততম ইন্টারনেট।
আরো পড়ুনঃ সহজে বিকাশ থেকে পেমেন্ট নেওয়ার কৌশল
টেলিটক সিম রিপ্লেসমেন্টের নিয়ম
টেলিটক সিম রিপ্লেসমেন্ট করতে হলে আপনাকে কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে যোগাযোগ করতে
হবে। আপনার যাবতীয় তথ্য দিয়ে হারানো পুরানো অকেজো সিম খুব সহজেই রিপ্লেস করে
নিন। এইখানে 150 থেকে 200 টাকা খরচ হবে। তাছাড়া আপনি টেলিটক ওয়েবসাইটে
গিয়ে ভিজিট করতে পারেন। ওইখানে সিম রিপ্লেসমেন্ট এর খুঁটিনাটি তথ্য দেওয়া
রয়েছে।
শেষ কথাঃ সিম রিপ্লেসমেন্ট করার সহজ কিছু নিয়ম
সিম রিপ্লেসমেন্ট কাজটি যতটা কঠিন বা ঝামেলা বলে মনে হয় আসলে কিন্তু এটি
খুব একটা ঝামেলার নয়। বরং আপনি যত বেশি দেরি করবেন তত বেশি ঝামেলায় জড়িয়ে
পড়বেন। যদি আপনি মনে করেন আপনার সিমে রিপ্লেসমেন্ট জরুরি, তাহলে দ্রুতই করে
ফেলুন।
আজকের এই আর্টিকেলে সিম রিপ্লেসমেন্ট নিয়ে সহজ কিছু নিয়ম আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার উপকারে আসে তাহলে কমেন্ট করবেন। ভুল ত্রুটি হলে যোগাযোগ পেজে গিয়ে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন। ভুলগুলো শুধরানো হবে।

ফকটেক ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url