আখের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা

আখের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানার জন্য গুগলে এসে সার্চ দিয়ে থাকেন। তাই আপনাদের জানার স্বার্থে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের সামনে আখের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

আখের-গুড়ের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

আখের গুঁড়ে অসাধারণ গুণাবলী রয়েছে, যা মানব শরীরের অসুখ বিসুখ দূর করার জন্য বেশ উপকারী। আখের গুড়ের অসাধারণ গুণাবলী জানতে হলে নিচের লেখাগুলো গুরুত্ব সহকারে পড়তে হবে। তাহলে জানতে পারবেন আখের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

পোস্ট সূচীপত্রঃ আখের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা

আখের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা

আখের গুড় আমাদের খাদ্য সংস্কৃতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আখের গুড় মূলত আখ/গেন্ডারী/কুশরের রস থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় গুড় তৈরি হয়। এটি প্রাকৃতিক মিষ্টি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আখের গুড় বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবার এবং খাবার পানীয় হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচীনকাল থেকে।

আখের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। তাই আজকের এই পর্বে আখের গুড়ের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করব। সব জিনিসেরই ভালো এবং খারাপ দিক রয়েছে। আখের গুড়ও এর ব্যতিক্রম নয়। আখের গুড় খাওয়া যেমন শরীরের পক্ষে উপকার ঠিক তেমনি অতিরিক্ত আখের গুড় খেলে শরীরের পক্ষে ক্ষতি বয়ে আনে। তাহলে চলুন আখের গুড়ের ভালো দিক এবং খারাপ দিক আলোচনা করি- 

আখের গুড়ের বহুবিধ উপকারিতা

প্রাকৃতিক শক্তির উৎসঃ আখের গুড় একটি প্রাকৃতিক কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাদ্য। আখের গুড়ে থাকা গ্লুকোজ এবং সুক্রোজ শরীরে দ্রুত শক্তি যোগায় এবং ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। এই গুড় শরীরে তাপ উৎপাদন করে এবং দেহে তাপমাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।এতে রয়েছে উচ্চমানের ক্যালোরিফিক যা শরীর উষ্ণ রাখে এবং শক্তি যোগায়।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ আখের গুড়ে ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি৭, ভিটামিন বি১২ থাকায় হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। আপনি খাওয়ার পর এক চামচ যদি আখের গুড় খান তাহলে আপনার পেটের সমস্যা যেমন গ্যাস, বদহজম এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করবে।

রক্তকে পরিশোধন করেঃ গুড়ে থাকা আইরন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এতে করে রক্তশূন্যতা ও রক্তস্বল্পতা কমিয়ে দেয়।

আরো পড়ুনঃসকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ আখের গুড়ে বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান রয়েছে। যেমনঃ লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক ও সেলেনিয়াম। এই উপাদান গুলো শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায় এবং বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করে।

প্রসাবের জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তিঃ গরমের সময় অনেকক্ষণ ধরে কাজ করলে প্রসাবের জ্বালাপোড়া হয়। আখের গুড় এই জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি দেয়। আখের গুড়ের শরবত বানিয়ে খেলে সকল প্রকার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিশেষ করে গরমকালে

শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা কমায়ঃকাশি বা বুকে কফ জমাট বাঁধা, রক্ত প্রবাহে সমস্যা কমাতে সাহায্য করে এ গুড়। ঠান্ডা বা সর্দি লাগলে কুসুম গরম পানিতে আখের গুড় মিশিয়ে খেলে ঠান্ডা বা সর্দি দূর হয়।

হাঁপানি সমস্যা দূর করেঃ যাদের হাঁপানি সমস্যা রয়েছে তারা আখের গুড় খেতে পারেন। কারণ আখের গুড় খাওয়ার ফলে হাঁপানি সমস্যা দূর হয়।

ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করেঃ গুড়ের মধ্যে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং খনিজ উপাদান আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে।

পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করেঃ এতে থাকা আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস এবং বিভিন্ন ভিটামিন শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে।

প্রাকৃতিক মিষ্টি হিসেবেঃচিনির তুলনায় এটি প্রাকৃতিক এবং কিছু ক্ষেত্রে চিনির ভালো বিকল্প হতে পারে, তবে এটি অতিরিক্ত গ্রহণ করা উচিত নয়।

শরীর ঠান্ডা রাখেঃগ্রীষ্মকালে আখের গুড়ের শরবত খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে।গরমকালে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে এ গুড়ের শরবতের বিকল্প নেই।

আখের গুড়ের অপকারিতা

আখের গুড় আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এটি নিয়ম মেনে খেলে যেমন উপকারী ঠিক তেমনি নিয়ম না মেনে খেলে বা অতিরিক্ত খেলে শরীরের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। যদিও এটি চিনির তুলনায় ভালো। তবে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে অনেক ক্ষতি হতে পারে। তাহলে চলুন আখের গুড়ের খারাপ দিকগুলো আলোচনা করি-

রক্তের শর্করা বাড়ায়ঃ আখের গুড় প্রাকৃতিক হলেও এতে প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি থাকে। অতিরিক্ত গুড় খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।

ওজন বৃদ্ধি করেঃ আখের গুঁড়ে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকায় অতিরিক্ত সেবনের ফলে দ্রুততম ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। তাই অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। বিশেষ করে যারা ওজন কমাতে চান বা ডায়েটে রয়েছেন।

দাঁতের ক্ষয়ঃ অন্য যেকোন মিষ্টি জাতীয় খাবারের মতো অতিরিক্ত গুড় খেলে দাঁতের ক্ষয় হতে পারে এবং দাঁতের ক্যাভিটি হতে পারে। তাই মিষ্টি জাতীয় খাবার বা গুড় খাওয়ার পর ব্রাশ করে নিবেন। এতে করে দাঁতের ক্ষয় রোধ হবে। 

হজমের সমস্যাঃ অতিরিক্ত গুড় খেলে বদহজম, পেট ফোলা এবং অন্যান্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা দেখা দিতে পারে।

সংরক্ষণজনিত সমস্যাঃ সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে গুড়ে ছাঁচ পড়ে যায়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

আখের গুড় খাওয়ার নিয়ম

আমরা সবাই আখের গুড়ের সাথে পরিচিত এবং সবাই কমবেশি গুড় খেয়ে থাকে। এই আখের গুড় বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকে। যেমন অনেকেই চায়ের সঙ্গে, রুটির সঙ্গে অথবা অথবা অনেকেই চিবিয়ে খায়। যার যেরকম পছন্দ সে সেরকম ভাবে খেতে পারে। আখের গুড় অনেকেই শরবত বানিয়ে খেতে স্বাচ্ছন্দাবোধ করে থাকে। আখের গুড়ের অনেক উপকারিতা রয়েছে যদি আপনি নিয়ম মেনে পরিমান মত খেতে পারেন তাহলে আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে অনেক ভালো।

প্রতিদিন সকাল বেলায় খালি পেটে এক চামচ আখের গুড় খেতে পারেন এতে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। আবার যদি খাবার পর এক চামচ আখের গুড় খেতে পারেন তাহলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে। আবার শীতের সময় সকালবেলায় কুসুম গরম পানি এবং এক টুকরো আখের গুড় মিশিয়ে শরবত বানিয়ে খেলে ঠান্ডা দূর করবে, শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করবে।

গলা খুসখুস, কাশি, কফ যদি থাকে তাহলে আদা এবং গুড় একসাথে কুসুম গরম পানির সাথে খেলে গলার যাবতীয় সমস্যা দূর হবে। ওজন কমাতে সাহায্য করবে এবং বিপাকতন্ত্রকে সচল করে তুলবে। এটি আপনি প্রতিদিন সকালে অথবা যে কোন সময় করতে পারেন।

যারা রোদে অথবা প্রচন্ড তাপের মধ্যে পরিশ্রম করেন তাদের জন্য আখের গুড় কার্যকরী উপাদান। রোদে বা প্রচন্ড গরমে কাজ করলে শরীরে পানির ঘাটতি পরে সেজন্য চটজলদি শক্তি ফেরাতে এবং পানির চাহিদা পূরণ করতে আখের গুড়ের শরবত অতুলনীয়। কাজের শেষে অথবা ঘুমোনোর আগে এক গ্লাস আখের গুড়ের শরবত খেলে সারাদিনের ক্লান্তি দূর হয়।।

আখের গুড় খেলে কি ওজন বাড়ে 

অনেকেই জানেন না যে আখের গুড় খেলে ওজন বাড়ে নাকি কমে। অন্যদিকে, চিনি খেলে ওজন বাড়ে কিন্তু চিনির বদলতে আখের গুড় খেলে কি ওজন বাড়বে? এরকম প্রশ্ন অনেকের মনে আসতে পারে। কারণ চিনির চেয়ে আখের গুড় শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তবে একটা কথা মাথায় রাখতে হবে যদি ওজন কমাতে চান তাহলে আপনাকে চিনি বা গুড় কোনটাই খাওয়া চলবে না।

পূর্বের আলোচনাতে বলা হয়েছে আখের গুড় প্রাকৃতিক কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ এবং এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে। যা দীর্ঘদিন সেবনের ফলে দ্রুততার সাথে ওজন বৃদ্ধি করে। যারা ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বা ডায়েট করেন অথবা ওজন কমাতে চান তারা আখের গুড় খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আর যদি আখের গুড় খেয়েও থাকেন তাহলে পরিমাণ মতো খাবেন।

আখের গুড় খেলে কি সুগার বাড়ে

আপনার প্রশ্ন যদি এটা হয়ে থাকে যে আখের গুড় খেলে কি সুগার বাড়ে, তবে আমার প্রশ্ন হবে হ্যাঁ, আখের গুড় খেলে সুগার বাড়ে।কারণ আখের গুড়ে প্রাকৃতিক মিষ্টি থাকায় রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, যারা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। ডায়াবেটিস রোগীরা চিনির বিকল্প হিসেবে যদি গুড় সেবন করে থাকেন, তাহলে থা্মুন! আজকেই বন্ধ করুন আপনার গুড় খাওয়ার অভ্যাস। কারণ

আখের-গুড়ের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

১০০ গ্রাম গুড়ে ৩৮৩ ক্যালোরি, ৬৫ থেকে ৮৫ শতাংশ সুক্রোজ থাকে এবং ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ থাকে, যা ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। গুড় খেলে ডায়াবিটিস রোগীদের শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এ কারণে এটি চিনির মতোই ক্ষতিকর ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য।

আখের গুড়ের শরবত খাওয়ার উপকারিতা

আখের গুড়ের শরবত খাওয়ার অনেক উপকারিতা হয়েছে। প্রতিদিন সকালে অথবা রাতে আখের গুড়ের শরবত খেলে শরীরে শক্তি বাড়ে, হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, রোগ প্রতিরোধ বাড়ে এবং এটি চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি শরীর শীতল রাখতে সাহায্য করে এবং দূষিত পদার্থ বাইরে বের করে দেয়। আখের গুড়ের শরবত বিভিন্ন ভাবে বানিয়ে খেতে পারেন।

লেবু ও আখের গুড় একসাথে শরবত বাড়িয়ে খাওয়া যায়। তাহলে চলুন রেসিপিটি জেনে নিই-প্রথমে একটি মগে বা গ্লাসে পরিষ্কার পানি দিয়ে তাতে পরিমাণ মতো আখের গুড় ভিজিয়ে রাখতে হবে। গুড়গুলো বলে গেলে এতে লেবুর রস মিশিয়ে এক চিমটি লবণ দিতে পারেন। পানীয়টি ভালোভাবে ছেকে নিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে পান করুন। পরদিন সকালবেলায় আপনার শরীর ফ্রেশ এবং শক্তিশালী মনে হবে।

ইসুবগুলের ভুষি দিয়ে আখের গুড় খাওয়া যায়। ইসুবগুলের ভুসি ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর পরিমাণমতো পানি দিয়ে তাতে গুড় দিয়ে ভালোভাবে গুলি দিতে হবে। তারপর ছাকনির সাহায্যে ছেকে নিয়ে।

ডায়াবেটিসে গুড় খাওয়া যাবে কি

বর্তমান বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগ এখন প্রত্যেকটা ঘরে ঘরে দানা বেধেছে। ডায়াবেটিস রোগীদের মিষ্টি খাওয়া নিষেধ বললে সবাই জানে। আবার অনেকেই  বিকল্প হিসেবে অনেক খাবার খেয়ে থাকেন। যেমন ভাতের বদলের রুটি, চিনির বদলে সুগার ফ্রি চিনি। তবে অনেকেই মনে করেন ডায়াবেটিস রোগীদের চিনির বদলে গুড় খাওয়া যেতে পারে। যারা এরকমটা মনে করেন তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলের এ অংশ। তাহলে চলুন ডায়াবেটিস রোগীদের আখের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা জানা যাক।

আখের গুড়ে জিআই মাত্র খুব বেশি থাকে। গুড় খেলে রক্তের শর্করা তাৎক্ষণিক বেড়ে যায়। কিন্তু গুড়ে ভাল মাত্রায় পটাশিয়াম, আয়রন ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে। তবে ডায়াবেটিসের জন্য এটাই স্বাস্থ্যকর নয়। ১০০ গ্রাম গুড়ে ৩৮৩ ক্যালোরি, ৬৫ থেকে ৮৫ শতাংশ সুক্রোজ থাকে এবং ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ থাকে, যা ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। গুড় খেলে ডায়াবিটিস রোগীদের শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এ কারণে এটি চিনির মতোই ক্ষতিকর ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য।

গুড় খেলে কি গ্যাস হয়

গুড় খেলে কি গ্যাস হয়? এই প্রশ্ন যদি আপনার হয়ে থাকে তাহলে আমি বলব পরিমাণের তুলনায় বেশি খেলে পেটে গ্যাসসহ, বদহজম ও পেট ফাঁপার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া আরো অনেক কারণে গুড় খেলে গ্যাসের সৃষ্টি হয়। তাহলে চলুন আরো অনেক কারণ জানি।

আপনি যে আখের গুড় কিনছেন সেটি খাঁটি কিনা সেটি চেক করে নিবেন। কেননা ভেজালযুক্ত এবং অপরিশোধিত গুড় খেলে বা গুড়ের শরবত খেলে পেটে গ্যাসসহ বদহজম হতে পারে। গুড়ে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে, যাও অতিরিক্ত খেলে পেটে গ্যাস হতে পারে। তাই পরিমাণ মতো নিয়মমাফিক আখের গুড় খেলে স্বাস্থ্য উপকার মিলবে অনেক গুণ।

অরজিনাল আখের গুড় চেনার উপায়

আসল আখের গুড় চেনার জন্য এর রং, গন্ধ, এবং টেক্সচার পরীক্ষা করতে পারেন। খাঁটি গুড়ের রং গাঢ় বাদামী বা কালচে হয় এবং এতে মাটির মিষ্টি গন্ধ থাকে। এটি স্পর্শ করলে একটু খসখসে মনে হয় কারণ এতে আখের আঁশ থাকে। অন্যদিকে, চকচকে বা বেশি হলুদ রঙের গুড়, অতিরিক্ত মসৃণ টেক্সচার বা তেলের মতো পিচ্ছিল ভাব থাকলে বুঝবেন এতে ভেজাল আছে।

কেনার সময় একটু গুড় ভেঙে নিয়ে চেখে দেখুন। নোনতা স্বাদের হলে বুঝবেন এই গুড়ে ভেজাল রয়েছে।গুড়ের ধারটা দুই আঙুল দিয়ে চেপে দেখবেন। যদি নরম লাগে, বুঝবেন ভালোমানের আর ধার বেশি শক্ত হলে না কেনাই ভালো।সাধারণত গুড়ের রং গাঢ় বাদামি হয়। হলদেটে রঙের গুড় হলে বুঝতে হবে অতিরিক্ত রাসায়নিক মেশানো।কৃত্রিম চিনি মেশানো গুড় দেখতে খুব চকচকে হয়।

চিনির চেয়ে কি আখের গুড় ভালো

চিনির চেয়ে আখের গুড়ের গুঁড় কি ভালো এ সম্পর্কে আপনারা প্রশ্ন করে থাকেন। আজকের এই পর্বে আখের গুড় ভালো না চিনির গুরু ভালো সেই সম্পর্কে আপনাদের অল্প কথায় ভালো ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব। চিনি এবং আখের গুড় দুইটিই মিষ্টি। কিন্তু চিনি এবং আখের গুড় এর মধ্যে পার্থক্য হল দুইটি উপাদানই আখ থেকে তৈরি করা হয়ে থাকে।

তবে মজার ব্যাপার হলো আখ থেকে চিনি তৈরি করার সময় আখের যাবতীয় গুণাবলী হারিয়ে যাই। অন্যদিকে আখ থেকে যখন গুড় তৈরি করা হয়। তখন আখের যাবতীয় গুণাবলী হারিয়ে যায় না। তাই একদিকে বিবেচনা করলে বুঝা যায় যে চিনির তুলনায় আখের গুড় অনেক বেশি উপকারী। তাই আপনারা যে কোন কিছু খেতে গেলে চিনির বদলে আখের গুড়ের গুঁড়া খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

আখের-গুড়ের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

বিশেষ করে আপনারা যখন চা খান। তখন চা এ চিনি না দিয়ে আখের গুড়ের গুড়া মিশ্রিত করে চা খাবেন। এটি চিনির বিকল্প হিসেবে কাজ করে থাকে। এছাড়াও উপরের আলোচনা থেকে আখের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা চাইলে জেনে আসতে পারেন।

মন্তব্যঃ আখের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা

পরিশেষে, আখের গুড়ের উপকারিতার গুরুত্ব অপরিসীম। আর এ আখের গুড় বিভিন্ন রকম রোগের ক্ষেত্রে ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। পাশাপাশি কিছু অপকারিতা রয়েছে। আর এই আলোচনার মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম আখের গুড় খেলে কি ওজন বাড়ে না কমে, আখের গুড় খাওয়ার নিয়ম এবং অরজিনাল আখের গুড় চেনার উপায়।

তাই আশা করি, আপনি যে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন হয়তো আপনি সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। তাই উপকৃত হয়ে থাকলে পোস্টটি সবার সাথে শেয়ার করে দিন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। অসংখ্য ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফকটেক ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url