ভাতের মাড় খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
ভাতের মাড় খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত নই। তাই আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের সাথে ভাতের মাড় খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ভাতের মাড় খেলে কি হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আমরা অনেকেই জানিনা যে ভাতের মাড় খেতে হয়। বিশেষ করে শহর অঞ্চলের মানুষজন জানে না যে ভাতের মাড় খেতে হয়। ভাতের মাড়ে অনেক পরিমান পুষ্টিগুণ রয়েছে। তাই ভাতের মাড়ের পুষ্টিগুণ জানতে হলে আপনাকে এই পুরো পোস্টটি ধৈর্য সহকারে পড়তে হবে। তাহলে চলুন বিস্তারিত আলোচনা করা যাক-
পোস্ট সূচীপত্রঃভাতের মাড় খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- ভাতের মাড় খাওয়ার উপকারিতা
- ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম
- ১০০ গ্রাম ভাতের মাড়ে পুষ্টিগুণ উপাদান
- ত্বকের যত্নে ভাতের মাড়ের ব্যবহার
- ভাতের মাড়ের ফেস প্যাক
- চুলের যত্নে ভাতের মাড়ের ব্যবহার
- ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয়?
- ভাতের মাড় খাওয়ার অপকারিতা
- ভাতের মাড় নিয়ে বাস্তব কিছু কথা
- শেষ কথাঃভাতের মাড় খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
ভাতের মাড় খাওয়ার উপকারিতা
ভাতের মাড় এই জিনিসটার সাথে সবাই আমরা পরিচিত। ছোট বড় সবাই জানে ভাতের মাড় হয়। অঞ্চল ভেদে ভাতের মাড়কে ফ্যানও বলে। আমরা ভাতের মাড়কে চিনলেও হয়তোবা জানিনা যে ভাতের মাড় খেতে হয়। ভাতের মাড়ে যে পরিমাণ প্রোটিন, শর্করা, ভিটামিন রয়েছে তা আপনি কল্পনাও করতে পারবে না। তাছাড়া ভাতের মাড়ে মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান আমাদের সবাইকে বিভিন্ন রকম রোগের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে।
ভাতের মাড়ে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, এই ফাইবার যা আমাদের খাদ্য হজম করতে সহায়তা করে। তাছাড়া শরীরকে ঠান্ডা রাখতে ভাতের মাড় খাওয়া যায়। তাহলে চলুন জেনে নিন ভাতে মার খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। নিম্নে ভাতের মার খাওয়ার উপকারিতা গুলো উল্লেখ করা হলো-
মাড়ে থাকা ভিটামিন বি, আয়রন ও খনিজ শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে।ভাতের মাড় একাধিক পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে বিভিন্ন রোগের উপশমেও হিসেবে ভূমিকা পালন করে। একই সাথে ভাতের মাড় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি শরীর সতেজ রাখে।ভাতের মাড়ে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা শরীরকে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়। কাজের ক্লান্তি দূর করে দ্রুত এনার্জি দেয়।
আরো পড়ুনঃসকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
ভাতের মাড়ে থাকা স্টার্চ পানিশূন্যতা রোধ করে এবং অন্ত্রের প্রাচীরকে সুরক্ষা দেয়, ফলে ডায়রিয়া কমাতে সাহায্য করে। পেট খারাপ ও ডায়রিয়া প্রতিরোধ করতে ভাতের মাড় খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই পেট ব্যথা ও ডায়রিয়া হলে এক গ্লাস ভাতের মাড়ের সাথে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে খেলে পেটের সমস্যা দূর হয়।
অনেকে কোষ্ঠকাঠিন্যের মত যন্ত্রণাদায়ক সমস্যায় ভোগেন। এটি হজমে সাহায্য করে, গ্যাস বা অম্বল কমায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়তা করে। বিশেষ করে সেদ্ধ ভাতের পাতলা মাড় হালকা খাবার হিসেবে দুর্বল মানুষ বা অসুস্থদের জন্য ভালো। এই কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ ও শরীরে পানি শূন্যতা দূর করে ভাতের মাড়। নিয়মিত ভাতের মাড় খেলে আমাদের বাওয়েল মুভমেন্ট ঠিক থাকে। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যর মত যন্ত্রণাদায়ক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
বিভিন্ন রকম শরীরচর্চা ও ব্যায়াম করার আগে এক গ্লাস ভাতের মাড় খেলে শরীরে প্রয়োজনীয় ৮টি উপকারী অ্যামাইনো এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যা শরীরচর্চা ও ব্যায়াম করার সময় বেশি গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। একই সাথে ভাতের মাড়ে থাকা কার্বোহাইড্রেট শরীরে এনার্জির ঘাটতি দূর করে এই ভাতের মাড়।
ভাতের মাড়ে থাকা ভিটামিন বি, খনিজ ও অ্যামিনো অ্যাসিড ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে এবং চুল মজবুত করে। অনেকেই এটি প্রাকৃতিক টোনার বা হেয়ার রিন্স হিসেবে ব্যবহার করেন। এটি প্রাকৃতিক স্ক্রাব তাব হিসেবে কাজ করে। ত্বকের ভিতর থেকে টানটান এবং উজ্জ্বল করে। এটি নিয়মিত সেবনে বয়সের ছাপ দূর হয়। রোদে পোড়া দাগ দূর করে ভাতের মাড়।
ভাতের মাড় খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। কেননা ভাতের মাড়ে সোডিয়ামের মাত্রা খুব কম থাকে। যা উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য।
গরমে বা ঘামে শরীরের যে পানি ও লবণ কমে যায়, মাড় তা পূরণ করতে পারে। এতে সোডিয়াম ও পটাসিয়ামও কিছু পরিমাণে থাকে।যারা শারীরিক পরিশ্রম করার সময় ক্লান্তি বোধ করে তাদের জন্য ভাতের মাড় উৎকৃষ্ট খাবার। ভাতের মাড়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট। এই কার্বোহাইড্রেট ক্লান্তি দূর করে শরীরের কাজ করার শক্তি যোগায়।
ভাতের মাড় শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড গরমের সময় ভাতের মাড় খেলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং শরীর সুস্থ থাকে।
ভাতের মাড় গাছের সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ভাতের মাড় গাছের গোড়ায় সার হিসেবে দিলে গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায় একই সাথে গাছে অল্প সময়ে ফুল ও ফল আসে।
আরো পড়ুনঃসকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো জল খেলে কি হয়
এছাড়াও ভাতের মাড় গৃহপালিত প্রাণী যেমন- গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া এদের একটি পছন্দের খাবার। ভাতের মাড় এ সকল গৃহপালিত প্রাণীদের চুসকা হিসেবে খাওয়ানো হয়।
ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম
ভাতের মাড় খাওয়ার কোন ধরা বাধা নিয়ম নেই। আপনার যে সময় ইচ্ছা সেই সময় ভাতের মাড় খেতে পারেন। তবে সবকিছু নিয়ম করে খেলে শরীরের জন্য ভালো। আপনি যদি সকালে খালি পেটে এক গ্লাস কুসুম গরম ভাতের মাড় লবণ অথবা চিনি দিয়ে খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীর সারাদিন সতেজ থাকবে। ভাতের মাড়ের সাথে লবন মিশালে শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স ঠিক থাকে। আবার যদি আপনি চিনি মেশান তাহলে শরীর দ্রুত শক্তি পায়।
আর আপনি যদি ভাতের মাড় রাতের বেলায় খান এতে আপনার ক্লান্তি দূর হবে এবং অর
নিদ্রা দূর হয়ে ভালো একটা ঘুম হবে। শরীর ঠান্ডা করে তুলবে। তবে আপনাকে গরম
অবস্থায় ভাতের মাড় খেতে হবে। যদি সংরক্ষণ করে রাখেন তারপরও বের করে গরম করে নিতে
হবে।
১০০ গ্রাম ভাতের মাড়ে পুষ্টিগুণ উপাদান
| পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ |
|---|---|
| ক্যালোরি | ৩৫–৫০ kcal |
| কার্বোহাইড্রেট | 7–9 গ্রাম |
| প্রোটিন | ০.৩–০.৫গ্রাম |
| ফ্যাট | ০.১ গ্রাম |
| ফাইবার | ৪–৮ মিলিগ্রাম |
| পটাসিয়াম | ২–৫ মিলিগ্রাম |
| ক্যালসিয়াম | ৩-৫ মিলিগ্রাম |
| ম্যাগনেসিয়াম | ১-২ মিলিগ্রাম |
| আয়রন | ০.০৫মিলিগ্রাম |
| পানি | প্রায় ৯০-৯২ গ্রাম |
ত্বকের যত্নে ভাতের মাড়ের ব্যবহার
ভাতের মাড় খাওয়ার পাশাপাশি ত্বকের যত্নেও ব্যবহার করা যায়। ভাতের মাড়ে থাকা বিভিন্ন পুষ্টিগুণ উপাদান ত্বকের জন্য কার্যকরী। ভাতের মাড় খেলে যেমন শরীর সতেজ এবং চাঙ্গা হয় ঠিক সেইভাবে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ভাতের মাড় ব্যবহার করা যায়। তাহলে দেরি না করে ত্বকের যত্নে ভাতের মাড়ের ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করি-
ভাতের মাড় ত্বক উজ্জ্বল করে।ভাতের মাড়ে থাকা ভিটামিন বি ও অ্যামিনো অ্যাসিড ত্বকের কালচে ভাব দূর করে, প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বলতা বাড়ায়।রোদে পোড়া দাগ হালকা করে ভাতের মাড়।এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের দাগ, সানবার্ন ও ট্যান দূর করতে সাহায্য করে। ত্বক ভিতর থেকে হয়ে ওঠে উজ্জ্বল এবং মসৃণ।ত্বককে করে কোমল ও মসৃণ করতেমাড়ের প্রাকৃতিক স্টার্চ ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে, ফলে ত্বক নরম হয়।ব্রণ ও প্রদাহ কমায় ভাতের মাড়ে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা ব্রণ, র্যাশ বা চুলকানি কমাতে সাহায্য করে।আরো পড়ুনঃনিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
এটি কিভাবে ব্যবহার করতে হবে এবং কিভাবে ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে তা অনেকেই জানতে চান। তাহলে চলুন বিস্তারিত আলোচনা করি। ভাতের মাড় ঠান্ডা হওয়ার পর মাড়টি ছেঁকে নিন।একটি তুলার বল বা কটন প্যাড দিয়ে মুখে লাগান।১৫–২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।প্রতিদিন বা এক দিন পরপর ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
ভাতের মাড়ের ফেস প্যাক
ভাতের মাড়ের ফেসপ্যাক বানিয়ে ত্বকে লাগালে ত্বক হবে উজ্জ্বল এবং মসৃণ। তাহলে চলুন কিভাবে ভাতের মাড় দিয়ে ফেসপ্যাক বানাতে হয় তা শিখে নিই। প্রথমে একটি বাটিতে ভাতের মাড় ২ টেবিল চামচ নিয়ে নিন,মধু ১ চা চামচ,বেসন বা চালের গুঁড়া ১ চা চামচ এবএবং লেবুর রস কয়েক ফোঁটাসব উপকরণ একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করো। এরপরে সারা মুখ ও গলায় ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। তারপরে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন এবং কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলো।
ভালো ফলাফল পেতে সপ্তাহে ২–৩ দিন ব্যবহার করলে ত্বক হবে উজ্জ্বল, দাগহীন ও মসৃণ।একই সাথে মৃত কোষ জোর করে তোকে চকচকে ও উজ্জ্বল করে। আবার দুধের সাথে ভারতের মার মিশে ত্বকে লাগালে ত্বক টানটান হয়ে ওঠে এবং ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে না। এছাড়াও ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে ভাতের মাড়ের সাথে এলোভেরা জেল মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বক সুন্দর হয় ও ত্বকের বলিরেখা দূর হয়
চুলের যত্নে ভাতের মাড়ের ব্যবহার
ত্বকের যত্নের পাশাপাশি ভাতের মাড় চুলের যত্নেও ব্যবহার হয়। ভাতের মাড় ব্যবহারের ফলে চুল পড়া কমে, রুক্ষতা-শুষ্কতা দূর হয় এবং চুল সুন্দর ঝলমলে মসৃণ হয়। ত্বকের যত্নে ভাতের মাড়ের ব্যবহার তো জানলাম তাহলে এবার চুলের যত্নে ভাতের মাড়ের ব্যবহার জানা দরকার। তাহলে চলুন দেরি না করে চুলের যত্নে ভাতের মাড়ের ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানি-প্রথমে একটি বাটিতে ভাতের মাড় হাফ কাপ কাপ নিয়ে নিন।
তারপর এতে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল তেল ১ টেবিল চামচ এবং একটি ডিমের কুসুম যোগ করুন।সব উপকরণ মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। এবা গোড়া থেকে চুলের আগা পর্যন্ত লাগাও।৩০-৪০মিনিট রাখুন, তারপর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলো। ভালো ফলাফল পেতে সপ্তাহে একবার ব্যবহার করলে চুল হবে নরম, ঘন ও শক্ত।
ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয়?
ভাতের মাড় খেলে মোটা হওয়া বা ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ ভাতের মাড়ে কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকে বলে ওজন বৃদ্ধি পায়।ভাতের মাড়ে প্রচুর পরিমাণে স্টার্চ (শর্করা) থাকে, যা শরীরের শক্তির উৎস।নিয়মিত ও বেশি পরিমাণে খেলে এই অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট চর্বি হিসেবে জমতে পারে।তাই যারা খুব বেশি খান, তাদের ওজন বাড়তে পারে।
সহজে হজম হয় মাড় সহজপাচ্য হওয়ায় শরীর দ্রুত শক্তি শোষণ করে। ফলে দুর্বল বা কম ওজনের মানুষদের জন্য এটি ভালো, কারণ এটি তাদের ক্যালোরি ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে। প্রতি ১ কাপ (প্রায় ২০০ মি.লি.) ভাতের মাড়ে থাকে প্রায় ৭০–৯০ ক্যালোরি, যা দৈনন্দিন খাবারের অংশ হিসেবে ওজন বাড়াতে সহায়ক।
আরো পড়ুনঃঅর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও অপকারিতা
তবে ভাতের মাড়ে প্রোটিন ও ফ্যাটের পরিমাণ খুবই অল্প। তাই এটি একা খেলে বড় ধরনের ওজন বৃদ্ধি সাধারণত হয় না।দিনে ১–২ কাপ পাতলা মাড় খেলে শরীর শক্তি পাবে, কিন্তু চর্বি জমবে না। তাই যারা শক্তি বৃদ্ধির জন্য ভাতের মাড় খেতে চান তারা অল্প পরিমাণে খেতে পারেন। তাহলে ওজন বাড়বে না।
ভাতের মাড় খাওয়ার অপকারিতা
ভাতের মাড়ের উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতাও রয়েছে। ভাতের মাড় খেলে উপকার
হয় কিন্তু দীর্ঘদিন এবং পরিমাণে বেশি খেলে অপকারিতা বা সমস্যা দেখা দেয়।
তাই কোন কিছু খাওয়ার আগে এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে খাওয়া
উচিত। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে এতক্ষণ ধরে ভাতের মাড়ের উপকারিতা
বিশ্লেষণ করলাম। এখন ভাতের মাড়ের কিছু অপকারিতা রয়েছে তা আপনাদের সামনে
তুলে ধরবো-
ভাতের মাড় সবসময় নিরাপদ নয়। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এটি উপযুক্ত নয়, কারণ এতে শর্করা বেশি থাকে।ভাতের মাড়ের প্রধান উপাদান হচ্ছে স্টার্চ বা শর্করা, যা রক্তে গ্লুকোজ দ্রুত বাড়ায়।অতিরিক্ত শর্করা গ্রহণ করলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যায়, যা ভবিষ্যতে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
অতিরিক্ত খেলে অপ্রয়োজনীয় ক্যালরি জমে শরীরে চর্বি বৃদ্ধি পেতে পারে। রাতে ঠান্ডা মাড় খাওয়া হজমে সমস্যা বা গ্যাস বৃদ্ধি করতে পারে। পুরনো বা দুর্গন্ধযুক্ত ভাতের মাড় কখনো খাবেন না। দীর্ঘদিন শুধুমাত্র মাড় খেলে শরীরে প্রোটিন ও অন্যান্য ভিটামিনের অভাব দেখা দিতে পারে।
ভাতের মাড় নিয়ে বাস্তব কিছু কথা
বর্তমান যুগের মানুষ অফুরন্ত ভাত পাচ্ছে বা খেয়ে বেঁচে আছে। তাই তারা অনেক ভাত
নষ্ট করছে বা ডাস্টবিনে ফেলে দিচ্ছে। এখন থেকে ২০-৩০ বছর আগের মানুষ সবাই
ভাত পায়নি। তারা অন্যের বাড়ি থেকে ভাতের মাড় চেয়ে নিয়ে খেয়েছে।
ভাতের জন্য কত সন্তান আহাজারি করেছে, কিন্তু ভাত পায়নি। তখন যারা বড়লোক বা ধনী
তাদের ঘরেই ভাত হত। সে ভাতের মাড় তারা চেয়ে নিয়ে এসে ক্ষুধা নিবারণ করত।
একবার ভাবুন তো এরকম সিচুয়েশনে আপনার দাদা, বাবা, চাচা পার করেছে। তাহলে আপনি
তাদের সন্তান হয়ে কিভাবে ভাত নষ্ট করতে পারেন। আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি যখন
আমি ছোট ছিলাম তখন ভাত পাইনি, তখন পানি খেয়ে থেকেছি। বর্তমানে ফিলিস্তিনের
কি এক অবস্থা। ওইদিকে তাকিয়ে আপনার কি ভাত নষ্ট করতে ইচ্ছে করে। দয়া করে
এই পোস্টটির এই অংশ পড়ার পর আপনারা কোন কিছু নষ্ট করবেন না। যতটুকু প্রয়োজন ঠিক
ততটুকুই নিবেন।
শেষ কথাঃভাতের মাড় খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় পাঠক, আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পেরেছেন ভাতের মাড় খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আসলে ভাতের মাড় হলো সহজলভ্য, সাশ্রয়ী ও বহুমুখী প্রাকৃতিক খাবার। পরিমিতভাবে খেলে এটি শরীরের শক্তি, সুস্থতা এবং সৌন্দর্য সবকিছুই দিতে পারে। সচেতনভাবে ব্যবহার করলে এক বাটি ভাতের মাড় হতে পারে দৈনন্দিন স্বাস্থ্য রক্ষার সহজ সমাধান। এটি শুধু একটি হালকা খাবার নয়, বরং আমাদের শরীর ও চেহারার যত্নে একটি প্রাকৃতিক উপহার।
তাই সুন্দর এবং সুস্থভাবে বাঁচতে হলে পরিমিত খাবার খাওয়া উচিত। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কোন মতামত থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন। আপনার বক্তব্য আমাদের কাছে মূল্যবান। এতক্ষণ ধরে ধৈর্য সহকারে পোস্টটি পড়ার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।



ফকটেক ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url