সকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো জল খেলে কি হয়
সকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো জল খেলে কি হয় জানলে অবাক হবেন। তাহলে চলুন আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানাবো সকালে খালি পেটে কিসমিস খেলে কি হয় এবং প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত।
কিসমিস আমাদের সকলেরই পরিচিত একটি খাদ্য। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো পানি পান করলে শরীরে জাদুর মত কাজ করে। কিসমিস ভেজানো পানি পান করলে খাদ্য হজম থেকে শুরু করে ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ সকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো জল খেলে কি হয়
- সকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো জল খেলে কি হয়
- সকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো পানি খাওয়ার উপকারিতা
- প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত
- কিসমিস কিভাবে খেলে ওজন বাড়ে
- কিসমিস খেলে কি ওজন কমে
- কিসমিস খেলে কি ফর্সা হয়
- প্রতিদিন কিসমিস খেলে কি হয়
- দুধের সাথে কিসমিস খাবার উপকারিতা
- কিসমিস খেলে যৌন সমস্যা দূর হয়
- কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা
- শেষ কথাঃ সকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো জল খেলে কি হয়
সকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো জল খেলে কি হয়
কিসমিস কি? কোন ফল থেকে কিসমিস তৈরি হয়? এইরকম প্রশ্ন সবার মনেই আনাগোনা করে। কিসমিস হল আঙ্গুর ফলের শুকনো রূপ। কিসমিস হলো শুকনো ফল বা ড্রাই ফুডস হিসেবে আমরা খাই। তবে বিভিন্ন খাদদের সংমিশ্রণে কিসমিস খেয়ে থাকি। যেমন পোলাও, সেমাই, পায়েস ইত্যাদি মিষ্টান্ন তৈরিতে ব্যবহার হয়। কিন্তু কিসমিস ভেজানো পানি পান করলে এর উপকারিতা দ্বিগুণ বেড়ে যায়।
কিসমিস ভেজানো পানি শরীরে ম্যাজিকের মত কাজ করে। কিসমিস ভেজানো পানি খাদ্য হজম
থেকে শুরু করে ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কিসমিস ভেজানো পানিকে সুপার ড্রিংস
হিসেবে ধরা হয়। কিসমিসে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেলস,
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার, আইরন, পটাশিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, ম্যাগনেসিয়াম এর
মত খনিজ পদার্থ এবং প্রাকৃতিক চিনি যা শরীরের জন্য অত্যন্ত কার্যকর।
এক কাপ কিসমিস চার ভাগে ভাগ করে একভাগ কিসমিস পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। এক
গ্লাস পানিতে সারারাত কিসমিস গুলো ভিজিয়ে রাখুন। সকালে কিসমিস গুলো আলাদা করে
খালি পেটে পানিটুকু খেয়ে নিন। অতিরিক্ত আঁশ এবং পুষ্টির জন্য ভেজানো কিসমিস গুলো
খেতে পারেন। এ পানিতে আলাদা করে চিনি মেশানোর দরকার নেই। কারণ কিসমিসে
প্রাকৃতিকভাবেই চিনি বিদ্যমান।
সকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো পানি খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো পানি খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক। কিসমিস ভেজানো পানি শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে চলুন কিসমিস ভেজানো পানি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করি-
খাদ্য হজমের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো আশ জাতীয় খাদ্য। আর কিসমিস হল আশ জাতীয় এবং ফাইবারযুক্ত খাবার।যা আমাদের খাদ্য হজমের প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পেটকে পরিষ্কার রাখে।
আরো পড়ুনঃ চুল পড়া বন্ধ করার উপায় ২০২৫ ঘরোয়া প্রতিকার ও ১৭টি টিপস
শরীরে শক্তি যোগায় শর্করা জাতীয় খাদ্য। কিসমিস হল প্রাকৃতিকভাবে শর্করা ও কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাদ্য। আর এটি পানিতে ভেজালে এতে থাকা শর্করা ও কার্বোহাইড্রেট দ্বিগুণ হয়ে যায়। যা ইনস্ট্যান্ট শক্তি যোগায়, এবং এনার্জি ধরে রাখে।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে কিসমিসের পানি অতুলনীয়। যারা দীর্ঘদিন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন তারা কিসমিস ভেজানো পানি খেলে তৎক্ষণাৎ সুবিধা পাবেন। কিসমিসের পানি পেটের জ্বালাপোড়া ভাব কমিয়ে পেটকে শীতল করে। তাছাড়া কিসমিসের পানিতে আন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা অন্তে প্রদাহ কমিয়ে পেটের সমস্যা দূর করে।
হার্ট ভালো রাখতে কিসমিসের পানি জাদুর মতো কাজ করে। কিসমিসের পানিতে রয়েছে
পটাশিয়াম, যা হার্টকে ভালো রাখে। রক্তে খারাপ কোলেস্টরেলের মাত্রা দূর করে।
এটিতে রয়েছে আইরন যা রক্তস্বল্পতা কমাতে সাহায্য করে। রক্ত চলাচল সচল রাখে
তাই হার্ট অ্যাটাক এর মত রোগের ঝুঁকি কমে।
লিভার ভালো রাখে কিসমিসের পানি। কিসমিসের পানিতে প্রাকৃতিকভাবে ডিটক্সিফাইং
বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা লিভারে থাকা ক্ষতিকর পদার্থ দূর করে।
কিসমিসে থাকা পটাশিয়াম রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণ করে। শরীরে থাকার সোডিয়াম
রক্তচাপের প্রধান কারণ। কিসমিসের পানিতে পটাশিয়াম থাকায় সোডিয়াম এর
মাত্রাকে দূর করে।
কিসমিসে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় ত্বককে সুন্দর করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বয়স জনিত
বার্ধক্যের লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও কিসমিসে ভিটামিন সি রয়েছে যা
ত্বকের কোলাজেন বৃদ্ধি করে যা ত্বক ফর্সা করতে সাহায্য করে।
কিসমিসের পানিতে থাকা ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি করে। বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
কিসমিসের পানি ওজন কমাতে সাহায্য করে। কিসমিস ভিজিয়ে রাখলে কিসমিসের ফাইবার
গুলো বেড়ে যায় যা খাদ্য হজম করে এবং ক্ষুধা কমায়। এতে ওজন কমাতে সাহায্য
করে।
এই পানি হাড় এবং দাঁতের জন্য খুব উপকারী। কিসমিসের পানিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম
এবং বোরন হার এবং দাঁতকে শক্তিশালী করে তোলে। তাছাড়া অস্টিওপোরোসিস ঝুঁকি
কমায়।
ক্যান্সার বিরোধী উপাদান রয়েছে কিসমিসের মধ্যে। কিসমিসের পানিতে ক্যাটেটিনস
ও পলিফেনল নামক উপাদান আছে, যা মরণঘাতী ক্যান্সার ঠেকাতে পারে।
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত এটা নির্ভর করে বয়সের ওপর। প্রতিদিন কিসমিস
খাওয়া যেরকম উপকার ঠিক তেমনি অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া ক্ষতিকর। আমরা কিসমিস খাই
কিন্তু মনে প্রশ্ন থেকেই যায়, যে প্রতিদিন কি পরিমান কিসমিস খেলে পুরো উপকার
পাবো। আবার এমনও মনে প্রশ্ন জাগে যে ২০ বা ২৫ গ্রাম কিসমিসে কি পরিমান
পুষ্টিগুণ থাকে। তাই সব প্রশ্নের অবসান হবে আর্টিকেলের মাধ্যমে। তাহলে চলুন ২৫
গ্রাম কিসমিসে কি পরিমান পুষ্টিগুণ থাকে তা নিচে ছকে দেওয়া হলো-
| উপদান | পরিমান |
|---|---|
| ক্যালরি | ৭৫-৮০মিলিগ্রাম |
| কার্বহাইড্রেট | ২১ মিলিগ্রাম |
| চিনি | ১৭ মিলিগ্রাম |
| ফাইবার | ১.০-১.২ মিলিগ্রাম |
| প্রোটিন | ০.৬-০.৭ মিলিগ্রাম |
| ফ্যাট | ০.০৮-০.৭ মিলিগ্রাম |
| পানি | ৩-৪% |
| ক্যালসিয়াম | ১২-১৫ মিলিগ্রাম |
| আয়রন | ০.৩৫-০.৪৫ মিলিগ্রাম |
| পটাশিয়াম | ১৭৫ মিলিগ্রাম |
| ম্যাগনেশিয়াম | ১০ মিলিগ্রাম |
| ফসফরাস | ১৫-১৮ মিলিগ্রাম |
| ভিটামিন | ০.০৬ মিলিগ্রাম |
| ভিটামিন সি | প্রায় নেই |
| অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট | প্রচুর পরিমানে |
ব্যক্তি অনুযায়ী কিসমিস খাওয়ার পরিমাণও কম-বেশি হতে পারে। বয়স, শারীরিক অবস্থা এবং স্বাস্থ্য লক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে কিসমিস খেতে হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রতিদিন ২৫-৩০ গ্রাম কিসমিস যথেষ্ট। প্রতিদিন এই পরিমাণ কিসমিস খেলে কিসমিসের পুরো পুষ্টিগুণ পাবেন। এতে কোন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারবে না।
শিশুদের জন্য কতটুকু কিসমিস প্রয়োজন। শিশুদের বয়স এবং ক্যালরির চাহিদা কম
থাকায় প্রতিদিন কিসমিস খাবার পরিমাণও কম করে দেওয়া উচিত। একটি শিশুকে প্রতিদিন
৫-১০ গ্রাম কিসমিস খাওয়ানো যেতে পারে। অতিরিক্ত খাওয়ালে কিসমিসে থাকা প্রাকৃতিক
চিনি দাঁতের ক্ষয় করতে পারে এবং ক্ষুধা মন্দা দেখা দিতে পারে।
খেলোয়ার বা শারীরিক শ্রমের ব্যক্তিরা কতটুকু কিসমিস খাওয়া জরুরি তা অনেকে জানে না। যারা শারীরিক পরিশ্রম বেশি করে বা খেলাধুলা করে তাদের প্রতিদিন ৩০-৩৫ গ্রাম কিসমিস খাওয়া জরুরী। কারণ কিসমিস তাৎক্ষণিক শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।
গর্ভবতী বা স্তনদানকারী মায়ের জন্য কতটুকু কিসমিস খাওয়া দরকারি? যদি প্রশ্ন
করেন তাহলে আমি বলব গর্ভাবস্থায় বা স্তন্যদানকারী মায়ের আয়রনের অভাব পূরণ করতে
কিসমিস খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন ২৫-৩০ গ্রাম কিসমিস খেলে আয়রনের ঘাটতি
কমবে। তবে খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
যারা ওজন কমাতে চান তারা প্রতিদিন ২০-২৫ গ্রাম কিসমিস খেতে পারেন। তবে শুকনো
কিসমিস থেকে কিসমিস ভিজিয়ে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। কারণ কিসমিস সারারাত
ভিজিয়ে রাখলে কিসমিসে থাকা ফাইবার বৃদ্ধি পায়, যা খাদ্য হজম করে এবং ক্ষুধা
নিবারণের কাজ করে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিসমিস না খাওয়াই ভালো। তবে বিশেষ প্রয়োজনে ৫ থেকে ১০ টি ভেজানো কিসমিস খেতে পারেন। তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন। যদি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে তাহলে খাবেন। না হলে নয়।
| ব্যাক্তি | পরিমান |
|---|---|
| প্রাপ্তবয়স্ক | ২৫-৩০ গ্রাম |
| শিশু | ৫-১০ গ্রাম |
| খেলোয়াড় বা শ্রমিক | ৩০-৩৫ গ্রাম |
| গর্ভবতী বা স্তনদানকার | ২৫-৩০ গ্রাম |
| যারা ওজন কমাতে ইচ্ছুক | ২০-২৫ গ্রাম |
| ডায়াবেটিস রোগী | ৫-১০টি |
কিসমিস কিভাবে খেলে ওজন বাড়ে
শরীরে ক্যালরি গ্রহণ করার পরিমাণ বাড়ালেই ওজনও বাড়বে তারতর করে। আমরা
সারাদিন যে পরিমাণ খাবার খায় সে পরিমাণ খাবার আমাদের পুরো শরীরের ক্যালরি চাহিদা
পূরণ করে। আবার দেখা যায় অনেকে প্রয়োজনের তুলনায় অধিক বেশি ক্যালরি
গ্রহণ করায় ওজন বেশি হয়ে যায়। পক্ষান্তরে দেখা যায় রোগা পাতলা স্বাস্থ্যহীন
মানুষ সারাদিন খাবার ঠিক খাচ্ছে কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় ক্যালোরি কম গ্রহণ
করছে।
কিসমিস খেলে কি ওজন কমে
কিসমিস খেলে কি ওজন কমে? অনেকে এরকম প্রশ্ন করে থাকেন। কিসমিস ওজন কমাতে পারে যদি
আপনি সঠিক মাত্রায় কিসমিস খেতে পারেন। কিসমিসে থাকে প্রাকৃতিক চিনি ও লেপটিন যা
অনেকক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। লেপটিন শরীরে চর্বি পোড়াতে
সাহায্য করে। কিসমিসে থাকা ফাইবার অন্তের স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। এটি
ওজন কমাতে সাহায্য করে।
১০--১৫ টি কিসমিস সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন সকালে খালি পেটে চিবিয়ে
খান। অথবা ১৫০ গ্রাম কিসমিস নিয়ে দুই গ্লাস পরিমাণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
সকালে উঠে পানিটা গরম করুন যতক্ষণ না দুই গ্লাস পানি এক গ্লাস হয়। হালকা কুসুম
গরম থাকতে পান করুন। বলা হয় সকালে গরম পানি পান করলে পেটের অতিরিক্ত মেদ
বা চর্বি কমে।
কিসমিস খেলে কি ফর্সা হয়
কিসমিস ত্বকের জন্য খুব উপকারী একটি খাদ্য। কিসমিসে রয়েছে ভিটামিনস, মিনারেলস,
অ্যান্টিঅক্সিডেনট, ফাইবার, আইরন, পটাশিয়াম, কার্বোডিট, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন
সি ও ই যা ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন করতে সাহায্য করে। এছাড়াও কিসমিসে
রয়েছে পলিফেনল যৌগ, যা ত্বকে রক্ষা করে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিকেলের হাত
থেকে।
আরো পড়ুনঃকুকুর কামড়ালে কত দিনের মধ্যে জলাতঙ্ক হয় জানুন
কিসমিসে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেন তৈরি করে যা ত্বককে টানটান করে এবং যৌবন সুলভ রাখে। কিসমিসে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে। ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বককে করে তোলে লাবণ্যময় এবং উজ্জ্বল। শরীর থেকে টক্সিন দূর করে কিসমিস। এর ফলে রক্ত পরিষ্কার হয় এবং ত্বকে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
প্রতিদিন কিসমিস খেলে কি হয়
প্রতিদিন নিয়মিত কিসমিস খেলে শরীরের নানা রকম সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। একজন ব্যক্তি যদি প্রতিদিন নিয়ম করে পরিমাণ মতো কিসমিস খায় তাহলে তার অনেক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য মত জটিল সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে। এছাড়া একজন পুরুষের জন্য ও এটা অনেক উপকারী। একজন পুরুষের যৌন অক্ষমতা দূর করতে কিসমিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া ও কিসমিসে রয়েছে অনেক ভিটামিন ও মিনারেল এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট। যা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলকে দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কিসমিস খেলে হজম শক্তি বাড়ে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।এছাড়া ও কিসমিস ব্লাড প্রেসার কমাতে সাহায্য করে। শরীর এবং মন সতেজ রাখতে প্রতিদিন পরিমাণ মতো কিসমিস খেতে পারেন।
দুধের সাথে কিসমিস খাবার উপকারিতা
দুধ এবং কিসমিস পারফেক্ট কম্বিনেশন। দুধে থাকে প্রোটিন এবং কিসমিসে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল যা আমাদের শরীরে তৎক্ষণাৎ শক্তি সঞ্চার করে।চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। আমরা যদি সকালে দুধের সাথে কিসমিস ব্লেন্ডারের ব্লেন্ড করে সেটিকে পান করি তাহলে এর মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে এনার্জি সঞ্চিত হবে। এর মাধ্যমে আমরা প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলস, আয়রন এবং প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান লাভ করতে পারব। এই মিশ্রণটি পান করার ফলে আমাদের হজম শক্তি অনেকটা বৃদ্ধি পাবে।
সকালে এই দুধ ও কিসমিসের মিশ্রণটি পান করার ফলে আমাদের সারাদিনের খিদে ভাব কমে যাবে। অর্থাৎ বেশি সময় পর্যন্ত পেট ভরা থাকবে। সারা দিনের কাজের প্রতি দীর্ঘ মনোযোগ বসবে। এই মিশ্রণটি খেলে আমাদের পেট এবং শরীর দুটোই ঠান্ডা থাকবে। শিশুদের প্রতিদিন দুধ ও কিসমিসের এই মিশ্রণটি খাওয়ালে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও বুদ্ধির বিকাশ ঘটবে। দুধ ও কিসমিস একসঙ্গে খাওয়ার পরে আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
আরো পড়ুনঃ নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
এই দুটি পুষ্টিকর উপাদান অবশ্যই আমাদের চুল এবং ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। দেহের বিভিন্ন ধরনের ক্যালসিয়াম ও পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করবে। এই পুষ্টিকর খাবারটি আমাদের দেহের ওজন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে। এই স্বাস্থ্যকর পানীয়টি খাওয়ার ফলে আমাদের রক্তে থাকা হিমোগ্লোবিনের মান বৃদ্ধি পাবে, হৃদরোগের ঝুঁকিও কমবে। তার পাশাপাশি আমাদের শরীরে থাকা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাকে কমিয়ে দিবে
কিসমিস খেলে যৌন সমস্যা দূর হয়
- কিসমিসে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, শরীরে দ্রুত এনার্জি বৃদ্ধি করে যা যৌন শক্তি বৃদ্ধি এবং স্থায়িত্ব কয়েকগুণ বাড়ায়।
- কিসমিসে থাকা আরজিনাইন নামক এমাইনো এসিড পুরুষদের টেস্টোস্টোরেন বৃদ্ধি করে, শুক্রাণুর গুণগতমান বৃদ্ধি করে এবং যৌনশক্তি বাড়ায়।
- কিসমিস রক্ত নালি প্রসারিত করে, যা লিঙ্গে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে এবং শক্ত ইরেকশন ঠিকঠাক করে।
- কিসমিসে থাকা ন্যাচারাল ফাইট্রো নিউট্রিয়েন্টস লিবিডো বৃদ্ধি করে শারীরিক সম্পর্কের প্রতি আকর্ষণ করে।
কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা
কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা আছে কিনা তা নির্ভর করে খাওয়ার পরিমাণ এর ওপর এবং ব্যক্তির স্বাস্থ্যের ওপর। মাত্রারিক্ত কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা রয়েছে। পরিমাণ মতো কিসমিস খেলে হজম সহ ওজনও কমাতে পারে। তবে বেশি পরিমাণে খেজুর বদহজম সহ ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। তাই তাই পরিমাণ মতো কিসমিস খান এবং স্বাস্থ্যকর উপাদান উপভোগ করুন। তাহলে চলুন খেজুর খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হোক-
- অতিরিক্ত কিসমিস খেলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা এবং গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যা হতে পারে।
- কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি আছে, যার অতিরিক্ত খেলে দ্রুত ওজন বাড়িয়ে দেয়। এটা একটা ক্ষতিকর দিক, যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য।
- কিসমিস প্রাকৃতিক চিনি থাকায় রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।
শেষ কথাঃ সকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো জল খেলে কি হয়
প্রিয় পাঠক, সকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো জল খেলে কি হয় ইতিমধ্যে আপনারা জানতে পেরেছেন। প্রতিদিন পরিমাণমতো কিসমিস খান এবং সুস্থ লাইফ উপভোগ করুন। মনে রাখবেন অতিরিক্ত কোন কিছু ভালো না। কোন কিছু অতিরিক্ত জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে।
আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। পোস্টটি পড়ে যদি ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান মন্তব্য করে যাবেন। এতে আমাদের প্রতিদিন আপনাদের জন্য আর্টিকেল লেখার আগ্রহ বাড়বে। ধৈর্য সহকারে পোস্টটি পড়ার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।



ফকটেক ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url