ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম

ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম অনেকেই জানতে চান তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট। এর মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম এবং সকালে বাসি পেটে পানি খেলে কি হয়।

ইসলামের-দৃষ্টিতে-সকালে-খালি-পেটে-পানি-খাওয়ার-নিয়ম

পানির অপর নাম জীবন। আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম এবং সকালে বাসি পেটে পানি খেলে কি হয় এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাক-

পোস্ট সূচীপত্রঃইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম

ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম

মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো পানি। পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকে পানির অস্তিত্ব বিদ্যমান। পানি ছাড়া পৃথিবীতে কোনো প্রাণিসত্তা টিকে থাকা অসম্ভব। আর পবিত্র কোরআনে পানিকে সব জীবের উৎস বলা হয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, "অবিশ্বাসীরা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী একসঙ্গে মিলিত ছিল; অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিয়েছি এবং প্রত্যেকটি সজীব বস্তুকে পানি থেকে সৃষ্টি করেছি; তবুও কি তারা বিশ্বাস করবে না?

প্রত্যেকটা প্রাণীর মূলে রয়েছে পানি। মানুষের শরীরে প্রায় 70 ভাগ পানি দ্বারা গঠিত। শুধু মানুষ নয়, প্রত্যেকটা প্রাণীর অস্তিত্ব পানির সঙ্গে জড়িত। পানিবিহীন কোন কিছু কল্পনা করা যায় না। আমাদের প্রত্যেকটা দিন শুরু হয় পানি স্পর্শ করে। প্রত্যেকটা মানুষের উচিত সকালে পানি পান করার মাধ্যমে দিন শুরু করার। কেননা বিশুদ্ধ পানি পান করে শরীর থেকে বিভিন্ন রোগ তাড়ানো সম্ভব। সকালে খালি পেটে পানি খেলে শরীরের অনেক উপকার হয়।

আরো পড়ুনঃ বিবাহিত পুরুষদের প্রতিদিন সকালের খাবার

ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম হয়তোবা আমাদের জানা নেই। তাই আমাদের পানি খাওয়ার নিয়ম এবং কিভাবে পানি খেলে সুন্নাহ পালন হবে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। যারা সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন পালন করতে চান তারা এই আর্টিকেল পড়ে পানি খাওয়ার নিয়ম জানতে পারবেন। তাহলে চলুন ইসলামের দৃষ্টিতে কিভাবে পানি পান করলে নবীজির সাল্লাল্লাহু সালাম এর পালন হবে।

বিসমিল্লাহ বলে পানি পান করা

হযরত মোহাম্মাদ সঃ বলেছেন প্রত্যেকটা খাবারের শুরুতে বিসমিল্লাহ্‌ পড়তে হয়। ঠিক সেই রকমই পানি পান করার শুরুতে বিসমিল্লাহ্‌ পড়তে হয়। কোন কিছু খাবার শুরুতে বিসমিল্লাহ্‌ অর্থাৎ আল্লাহর নাম নিয়ে খাওয়া শুরু করলে আল্লাহ সেই খাবার  বরকত দান করেন। বিসমিল্লাহ্‌ বলে পানি পান করলে আল্লাহ তায়ালা পানি বরকতময় করে দেন এবং সমস্ত রোগ ভালো করে দিন। তাই আমদের সকলের উচত হযরত মোহাম্মাদ সঃ এর সুন্নত পালন করে পানি পান করা অর্থাৎ বিসমিল্লাহ্‌ বলে পানি পান।

আর আপনি যদি বিসমিল্লাহ না বলে পানি খাওয়া শুরু করেন তাহলে শয়তান হাসে আর বলে আল্লাহর কাছে বরকত না চেয়ে পানি পান করে নিলে, আর তোদের সাথে আমাকে অংশীদার করলি। তখন দেখা যায় রোগ বালাই লেগেই থাকে। তাই শুধু পানি নয়, যে কোন খাবার খাওয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ বলে শুরু করলে খাবারটি বরকতময় করে দেন আল্লাহ।

ডান হাতে গ্লাস ধরে পানি পান করা

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম কোন কিছু খাওয়ার সময় ডান হাত ব্যবহার করতে বলেছেন। কারণ ডান হাত হলো বরকতময় হাত। বাম হাতে শয়তান খাবার খায় এবং বেশি ব্যবহার করে। তাই পানি পান করার সময় ডান হাতে পান করা উচিত। তার হাতে পানি পান করলে একদিকে যেমন সুন্নাহ পালন হয় ঠিক তেমনি আল্লাহর খুশি অর্জিত হয়। তাই বিসমিল্লাহ পাশাপাশি ডান হাতে পানি পান করা উত্তম কাজ। তাই ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম করা উচিত সবার।

আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, আমার ডান হাতে কোন খাবার খায় তাহলে কি বাম হাতে পানি খেতে পারব। আমার উত্তর হবে না। মনে করুন আপনি ভাত খাচ্ছেন, তাহলে তো আপনার হাত মাখানো তাই না! তাই আপনি বাম হাতে পানির গ্লাস ধরবেন এবং ডান হাতের উল্টো পিঠ সেই গ্লাসে লাগাবেন তারপর পানি পান করবেন। তাহলে আপনার বাম হাতে আর পানি খাওয়া লাগলো না। ডান হাতের ছোঁয়াতে থাকল।

বসে পানি পান করা

পানি কখনোই দাঁড়িয়ে পান করা উচিত নয়। শুধু পানি কেন কোন খাবারই দাঁড়িয়ে খাওয়া ঠিক না। মহা নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন," তোমাদের মধ্যে কেউ যেন দাঁড়িয়ে পানি পান না করে। আর কেউ যদি ভুলে গিয়ে দাঁড়িয়ে পানি পান করে তার সাথে সাথে বমি করে ফেলে দেয়"। আরেকটা হাদিসে এসেছে আনাস (রাঃ) বলেন, নবী নিষেধ করেছেন যে, কোন লোক যেন দাঁড়িয়ে পান না করে। আনাস (রাঃ) কে দাঁড়িয়ে খাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বললেন, ‘এটা তো আরো খারাপ ও আরো নোংরা।

আরো পড়ুনঃসকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

তাছাড়া দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। যেমনঃ বদহজম, কিডনির সমস্যা, ফুসফুসের ঝুঁকি বাড়ে আরো অনেক সমস্যা দেখা দেয়। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তা প্রচন্ড শক্তিতে খাদ্যনালীর ভিতর দিয়ে তলপেটে প্রবেশ করে যে কারণে বদহজম হয়। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে প্রচন্ড শক্তিতে সিস্টেমের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। যার ফলে অক্সিজেনের ব্যাঘাত ঘটে। আর অক্সিজেনের ব্যাঘাত ঘটলে ফুসফুস ও হার্টের সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি পান করার নিয়ম জেনে পান করা উচিত।

তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করা

তিন নিঃশ্বাসে অর্থাৎ ধীরে ধীরে পানি পান করা উচিত। নবী করীম সাঃ তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করতেন এবং সাহাবীদেরকেও তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করতে বলতেন। তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করলে উত্তমরূপে তৃষ্ণা নিবারণ হয় এবং খাদ্য হজম প্রক্রিয়া আরো সচল হয়। তাই একেবারে পানি পান না করে ধীরে ধীরে পান করা উচিত। যখন তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করা হবে তখন অধিক পরিমাণ লালা পানির সাহায্যে পেটের ভিতর গিয়ে খাদ্য হজমে সহায়তা করে।

বোতল জাতীয়/বড় পাত্রের মুখে মুখ না লাগিয়ে পানি পান করা

অনেকেই পানি পান করার সময় বোতল জাতীয় পাত্রে মুখ লাগিয়ে পান করেন। এইভাবে পানি পান করতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছে। তিনি বলেছেন," মশকের মুখে মুখ না লাগিয়ে পানি পান করতে, অপবিত্র বস্তু ভক্ষণকারী জানোয়ারের পিঠে সওয়ার করতে, তীর বিদ্ধ পশুর মাংস ভক্ষণ না করতে।আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মশক উল্টিয়ে ধরে এর মুখে মুখ লাগিয়ে পান করতে নিষেধ করেছেন।

যখন বোতলজাতীয় পাত্র উল্টিয়ে ধরে মুখে মুখ লাগিয়ে পানি পান করা হয় তখন পানি সরাসরী পাকস্থলিতে গিয়ে পড়ে এবং পানির সাথে মুখের লালার মিশ্রণ হয় না। এভাবে পানি পান করলে শরীরের ভিতরে উৎপন্ন হওয়া কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাইরে বের হ’তে পারে না এবং তা পানির সাথে মিশে কার্বনিক এসিড তৈরী করে। ফলে খাদ্য হজম প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। তাই মশক বা বোতল উল্টিয়ে ধরে মুখের সাথে মুখ লাগিয়ে পানি পান করা স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। স্বাস্থ্যের জন্য পানি পান করা উপকৃত হতে পারে যদি আপনি ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি পান করার নিয়ম সঠিকভাবে মেনে চলেন।

পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস বা ফু না দিয়ে পান করা

অনেকে পানি পান করার সময় পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলে বা গরম পানীয় পান করার সময় বা গরম খাবার ঠান্ডা করার জন্য ফুঁ দিয়ে থাকে। এরূপ নিঃশ্বাস ফেলতে বা ফুঁ দিতে রাসূলুল্লাহ সাঃ নিষেধ করেছেন। ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সাঃ) পাত্রের মধ্যে শ্বাস ফেলতে এবং তাতে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন’।আমরা যখন পানি পান করি তখন পানিকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়ার জন্য ভিতর থেকে গ্যাস বের হয় যা স্বাভাবিক। 

আরো পড়ুনঃসকালে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো জল খেলে কি হয়

কিন্তু যখন পানিতে নিঃশ্বাস ফেলা হয় বা ফুঁ দেওয়া হয় তখন সেই নিঃশ্বাসে বা ফুঁ-এর সাহায্যে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়। এই কার্বন-ডাই-অক্সাইড পানির সাথে বিক্রিয়া করে কার্বোনিক এসিড উৎপন্ন করে এবং এই এসিড পানির সাথে পেটে প্রবেশ করে। যখন এই কার্বোনিক এসিড পেটে প্রবেশ করে তখন পেটে গ্যাস উৎপন্ন হয়, যার ফলে পেট ফেঁপে যায়। যা আমাদের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই এসিডের কারণে আমাদের হজম ক্রিয়া ব্যাহত হয় এবং খাদ্য পাকস্থলি হ’তে ক্ষুদ্রান্ত্রে যেতে অনেক সময় নেয়। এসকল কারণে পেট ফেঁপে গিয়ে আমাদের অস্বস্থি অনুভূত হয়।

শেষ আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করা

কোন কিছু খাওয়া, পান করা, কোন কাজ শেষ করার শেষে আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করতে হয়। শুকরিয়া জ্ঞাপন করতে শেষে আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করা উচিত প্রত্যেকটা মুসলিমের।যেকোনো খাবার খাওয়ার শেষে আলহামদুলিল্লাহ্‌ পাঠ করা সুন্নত। কেননা হযরত মোহাম্মাদ সঃ খাবার খাওয়ার পর সর্বদা আলাহামদুল্লিলাহ পাঠ করতেন। আল্লাহর নিয়ামত ভক্ষন করার পর অবশ্যই আল্লাহর প্রশংসা করতে হবে। আর প্রশংসা করতে হবে আলহামদুলিল্লাহ্‌ পাঠ করে। কথা বলে নয়। কেননা আল্লাহ সব কিছু আমদের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তাই সব কিছু বিনিময়ে আলাহামদুলিল্লাহ অবশ্যই পাঠ কতে হবে।

সকালে খালি পেটে পানি পান করার উপকারিতা

বিশুদ্ধ পানির অপর নাম জীবন। মানবদেহে ৭০ ভাগ পানি দিয়ে গঠিত। পানি খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। তবে সবচেয়ে উপকারিতা পাওয়া যায় সকালে খালি পেটে পানি খেলে। সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার কয়েকটি উপকারিতা নিম্নে আলোচনা করা হলো।

  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ সকালে খালি পেটে পানি খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শরীরকে কর্মক্ষম করে এবং ঠিকমতো কাজ করতে সাহায্য করে। এর সাথে বিভিন্ন অসুস্থতা বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে ।
  • পাচনের সহায়তা করেঃ পানি পাচনের কাজে সাহায্য করে ও পাচন সমস্যাগুলির ঝুঁকি কমায়। খালি পেটে পানি খেলে পাচন তাড়াতাড়ি হয় এবং খাদ্য পরিপাক ভালোভাবে হয়। পানি খাওয়ার ফলে বিপাকীয় হার ২৫% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় এর ফলে খাবার দ্রুত হজম হয়।
  • অন্ত্র পরিষ্কার করেঃ খালি পেটে পানি খেলে পরিপাকতন্ত্র নিয়ন্ত্রণে অনেকটা সহায়তা করে। তাই খালি পেটে পানি খেলে আমাদের মলত্যাগের সময় শুয়ে থেকে বজ্র বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে।
  • শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করেঃ সকালে খালি পেটে পানি খেলে আমাদের শরীর থেকে টক্সিন বের হয়ে যায়। আমরা যখন প্রসাব করি তখন শরীর থেকে এই টক্সিন বের হয়ে যায়।
  • মাইগ্রেনের সমস্যা দূর করেঃ মাথা ব্যথা ও মাইগ্রেনের সমস্যা প্রধান কারণ হলো শরীরে তরল পথের অভাব বা ডিহাইডেশন। তাই সকালে খালি পেটে পানি খেলে মাইগ্রেনের সমস্যা দূর হয়। এছাড়াও পানি মুখে সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
  • ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার অভ্যাস করলে দ্রুত ওজন কমতে শুরু করে। পানিতে যেহেতু ক্যালরি নেই তাই ঘন ঘন পানি খেলে তাড়াতাড়ি ওজন কমে যায়।
  • কষ্ঠোকাঠিন্ন দূর হয়ঃ প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পানি খেলে কষ্ঠোকাঠিন্ন মত কঠিন সমস্যা দূর হয়।
  • ত্বকের সুস্থতাঃ সকালে খালি পেটে পানি খেলে ত্বকের সুস্থতা ভালো থাকে এবং ত্বক সতেজ ও উজ্জ্বল হয়। এছাড়াও মুখে ব্রণ কম হয় ও তাকে সুস্থতা দূর করে।
  • শরীরের উদ্বেগ কমানোঃ সকালে খালি পেটে পানি খাওয়া ফলে শরীরের উদ্বেগ কমে এবং নিজেকে সতেজ এবং শান্ত মনে করে।
  • কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণঃ প্রতিদিন সকালে পানি খাওয়ার মাধ্যমে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • অস্থি ও মাংসপেশী স্বাস্থ্যের উন্নতিঃ পানি অস্থি ও মাংসপেশী স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এবং যৌবনকে ধোরে রাখতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকে বয়স্কের ছাপ পড়ে না।
  • ব্যক্তিত্বের সুস্থতার উন্নতিঃ সকালে খালি পেটে পর্যাপ্ত পানি খেলে মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার উন্নতি ঘটে।
  • ব্লাড সার্কুলেশনের উন্নতিঃ পানি ব্লাড সার্কুলেশনের উন্নতি করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • মূত্রনালী স্বাস্থ্যে সুস্থতায়ঃ সকালে খালি পেটে পর্যাপ্ত পানি খেলে মূত্রনালীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
  • মস্তিষ্কের কাজের সাহায্যঃ পানি মস্তিষ্কের কাজের সাহায্য করে ও মস্তিষ্কের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • হার্ট ভালো রাখেঃ প্রতিদিন খালি পেটে পানি খাওয়া মাধ্যমে হার্ট ভালো থাকে। এবং হার্টের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  • হ্যাপি হোর্মোন উন্নত করাঃ খালি পেটে পানি খাওয়া মাধ্যমে গ্ল্যাডিয়েটরি হরমোন এবং অন্যান্য হ্যাপি হরমোন উন্নত হয়। যা মানবদেহকে ভাল রাখতে সাহায্য করে।
  • ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাসঃ বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, প্রতিদিন খালি পেটে পানি খাওয়ার মাধ্যমে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়।
  • কিডনির সুস্থতাঃ খালি পেটে পানি খাওয়ার মাধ্যমে কিডনির সুস্থতা বজায় থাকে।

দিনে কত লিটার পানি পান উচিত 

প্রাপ্তবয়স্ক ও শারীরিক কর্মকম নারী ও পুরুষ উভয়ের দৈনিক ২ থেকে ৩ লিটার পানি খাওয়া উচিত। তবে প্রতিদিন কতটুকু পানি পান করতে হবে এটা মূলত নির্ভর করে আবহাওয়া ও শারীরিক পরিশ্রমের উপর। আবহাওয়ার কারণে শীতকালের তুলনায় গ্রীষ্মকালে শরীরে পানির চাহিদা অনেকটা বৃদ্ধি পায়। যারা শারীরিক পরিশ্রম করে তাদের বেশি পরিমাণে পানি খেতে হয়।

ইসলামের-দৃষ্টিতে-সকালে-খালি-পেটে-পানি-খাওয়ার-নিয়ম

এছাড়া স্বাভাবিকের তুলনায় যে সকল নারী ও পুরুষ অতিরিক্ত ঘামে তাদের জন্য বেশি পানি খাওয়া জরুরি। তাই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা যেমন কিডনি যকৃত হৃদপিণ্ড মস্তিষ্ক ও শরীরের কোষকে সুস্থ ও সবল রাখার জন্য এবং শরীরে পানির ঘাটতি মেটানোর জন্য যখনই পানির পিপাসা লাগবে তখন পরিমাপ মতো পানি পান করা উচিত।

অতিরিক্ত পানি পান করলে কি হয়

অতিরিক্ত পানি পান করলে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। যা আমাদেরকে মৃত্যুর ঝুঁকি পর্যন্ত হতে পারে। তাই পরিমাণ অনুযায়ী পানি পান করুন এবং সুস্থ থাকুন। অতিরিক্ত পানি পান করলে যে সমস্যাগুলো হয় তা নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ

  • হার্ট এট্যাক এবং স্ট্রোকঃ অতিরিক্ত পানি খাওয়ার ফলে হার্ট এট্যাক এবং স্ট্রোক হতে পারে।
  • হাইপোন্যাট্রেমিয়াঃ অতিরিক্ত পানি খেলে ইলেকট্রোলাইট স্তর কমে যেতে পারে এবং এটি হাইপোন্যাট্রেমিয়ার কারণ হতে পারে। যা জীবনের জন্য ঝুঁকির সম্মুখিন।
  • কিডনি সমস্যাঃ অতিরিক্ত পানি খেলে কিডনির কাজকর্মে সমস্যা হতে পারে।
  • প্রস্রাবের সমস্যাঃ অতিরিক্ত পানি খেলে প্রস্রাবের সমস্যা হতে পারে এবং এর ফলে প্রস্রাবে জ্বালা ও ব্যথা হতে পারে।
  • মানসিক দক্ষতা হ্রাসঃ হাইপোন্যাট্রেমিয়া এবং ইলেকট্রোলাইট ব্যতিক্রম কারণে মানসিক দক্ষতা হ্রাস পেতে পারে।
  • ওজন বৃদ্ধিঃ অতিরিক্ত পানি খেলে শারীরে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে এবং এটি মোটাপার সঙ্গে সংযোগিত হতে পারে।
  • পাঁচালি এবং শ্বাসকষ্টঃ হাইপোন্যাট্রেমিয়া এবং হাইপারন্যাট্রেমিয়া এর ফলে পাঁচালি এবং শ্বাসকষ্ট বাড়তে পারে।
  • পাচন সমস্যাঃ অতিরিক্ত পানি খেলে পাচন সমস্যা হতে পারে এবং এটি এসিড রিফ্লাক্স, গ্যাস এবং পেটে অসুস্থতা উত্পন্ন করতে পারে।
  • হাইপারগ্লাইসেমিয়াঃ অতিরিক্ত পানি খেলে ব্লাড সুগার স্তর হ্রাস হতে পারে এবং এটি ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য একটি ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
  • গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাঃ অতিরিক্ত পানি পানে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা হয়তো বাড়তে পারে, যা পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে।
  • হাইপোণ্যাট্রেমিয়াঃ অতিরিক্ত পানি খাওয়ার ফলে হাইপোণ্যাট্রেমিয়া হতে পারে, যা মানব দেহের সবচেয়ে উচ্চ রক্তচাপ মাত্রা বিশিষ্ট হতে পারে।

মন্তব্যঃ ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম

প্রিয় পাঠক, আজকের এই আর্টিকিলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পেরেছেন ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম। আপনি যদি এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তাহলে ইসলামের দৃষ্টিতে পানি খাওয়ার নিয়ম জেনেছেন। ইসলামের দৃষ্টিতে পানি পান করে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর সুন্নাহ পালন করুন এবং মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করুন।

অতএব রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাত মোতাবেক পানি পান করলে অর্থাৎ বসে, তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করলে এবং পানির মধ্যে নিঃশ্বাস বা ফুঁ না দিলে এই পানি আমাদের হজমে সহায়তা করবে এবং স্বাস্থ্য ভাল থাকবে ইনশাআল্লাহ। অপরদিকে এইভাবে পানি পান না করলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ত হবে না কিন্তু নিয়মিত এই সুন্নাত বিরোধী পদ্ধতিতে পানি পান করার কারণে তা একসময় বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। মহান আল্লাহ আমাদেরকে বোঝার তৌফিক দান করুন আমীন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফকটেক ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url