গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ পদ্ধতি-ও পরিচর্যা বিস্তারিত জানুন

 গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে অনেকে গুগলে এসে সার্চ দিয়ে থাকেন। আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ পদ্ধতি এবং গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ পদ্ধতি ও পরিচর্যা।

গ্রীষ্মকালীন-টমেটো-চাষ-পদ্ধতি-ও-পরিচর্যা-বিস্তারিত-জানুন

টমেটো একটি শীতকালীন সবজি হলেও কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট অনেক গবেষণার পরে শীতকালীন সবজিকে তাপমাত্রা সহনশীল করে গ্রীষ্মকালেও চাষ করা সম্ভব করে তুলেছে। তাই আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের বিস্তারিত।

পোস্ট সূচিপত্রঃ গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ পদ্ধতি

গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ পদ্ধতি

শীতকালীন সবজি হল টমেটো। শীতকালে অহরহ পাওয়া যায় টমেটো। কিন্তু এই টমেটো যদি অমৌসুমিতে পাওয়া যায় তাহলে অনেক চড়া দামে বিক্রি করা সম্ভব। শীতকালের তুলনায় গ্রীষ্মকালে প্রায় তিন চার গুণ বেশি দামে বিক্রি করা যায় টমেটো। শীতকালেও টমেটো বিক্রি করে দুই তিন গুণ লাভ করা যায়, তবে আগাম টমেটো চাষ করতে হবে। বর্তমানে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে অনেক ফলন ও আকর্ষণীয় রং হয় এমন হাইব্রিড টমেটো বীজ পাওয়া যায় বাংলাদেশ। যা আগাম টমেটো চাষ করে অনেক লাভবান হওয়া যায়।

টমেটো এমন একটি সবজি যা আমরা কাঁচা ,পাকা এবং রান্না করে খেতে পারি। এছাড়াও টমেটোর সস, কেচাপ, চাটনি ও জুস হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বেশ কিছু উন্নত টমেটোর জাতের  উদ্ভাবন করেছে। যা মৌসুম ছাড়াও ফল দেয়। তাছাড়া আরো এমন কিছু হাইব্রিড জাত আশাতে সারা বছর টমেটো পাওয়া যায়। এবং তবে দেশেও বেশ কিছু আধুনিক উচ্চফলনশীল জাতের টমেটো উদ্ভাবন করা হয়েছে, যেগুলো ভালো ফলন দিচ্ছে। সব মিলিয়ে এ দেশে এখন পঞ্চাশটিরও বেশি জাতের টমেটো চাষ হচ্ছে।

গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের সময়

গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করার কথা বলা হয়েছে যে সকালে টমেটো চাষ করে অনেক লাভজনক পাওয়া যায় অল্প পুজিতে বেশি লাভকরা হয়। অন্য সময় যে টমেটোর দাম থাকে না সেটা যদি গ্রীষ্মকালে লাগানো হয় তাহলে বেশি লাভজনক হবে কারণ গ্রীষ্মকালে মানুষ টমেটো লাগায় না আর যারা লাগায় তারা উন্নত জাতের তারা সারা বছর বিক্রি করে।

উচ্চ তাপমাত্রায় এবং বাতাসের আদ্রতা টমেটো গাছে রোগ বিস্তারের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। আবার উচ্চ তাপমাত্রা বা শুষ্ক আবহাওয়ায় টমেটো গাছের ফুল ঝরে পড়ে। রাত্রির তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর নিচে থাকলে তা গাছ ও ফুল ধারনের জন্য বেশ উপযোগী। ২০ ডিগ্রি থেকে ২৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের তাপমাত্রা থাকলে টমেটোর ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব। তবে রাতের তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর ওপরে থাকলে টমেটোর আসানুরূপ ফল হয় না।

আরো পড়ুনঃ নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিত জানুন

বর্তমানে বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালে মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস রাতের তাপমাত্রা সব সময় বেশি থাকে সেই কারণে শীতকালীন টমেটোর কোন জাত গ্রীষ্মকালে হয় না। কিন্তু নতুন উদ্ভাবিত গ্রীষ্মকালীন জাতগুলি ২৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের ওপরে রাতের তাপমাত্রাও ফল ধারণ করতে সক্ষম। অপেক্ষাকৃত অধিক  তাপমাত্রায় ফল ধারণক্ষমতা উদ্ভাবিত নতুন জাত গুলো স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয় না। আলো বাতাস উর্বর দোআঁশ মাটি টমেটো চাষের জন্য সবচেয়ে ভালো। তবে উপযুক্ত পরিচর্যা বেলে দোআঁশ এবং এঁটেল দো আঁশ মাটিতেও টমেটো ভালো জন্মায়। বন্যার সময় এমন জমিতে এর ফলন সবচেয়ে ভালো হয় করা উচিত। মাটির অম্লতা বেশি হলে জমিতে চুন প্রয়োগ  করতে হবে।

গ্রীষ্মকালীন টমেটোর জাতের নাম

টমেটো লাগানোর জন্য পিডিবি অনুসারে কাজ করতে হবে পিডিপি অনুসারে যদি কাজ করা যায় তাহলে মানুষ বিভিন্নভাবে উপকারিতা পাবে এবং কখন, কিভাবে কোন গাছ লাগাতে হবে কি করতে হবে সে সকল বিষয় বলে সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়ে থাকে এবং তাদের প্রশিক্ষণ অনুযায়ী কাজ করলে অল্প সময়ে বেশি ফলন করা যাবে।

গ্রীষ্মকালীন টমেটোর যেই সকল জাতগুলো মাঠ পর্যায়ে ৪০০ হচ্ছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু জাত হলো বারি হাইব্রিড টমেটো-৩, বারি হাইব্রিড টমেটো-৪, বারি হাইব্রিড টমেটো-৮ এবং এসআই সামার কিং। কৃষকদের সুবিধার জন্য এসব টমেটোর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল-

বারি হাইব্রিড টমেটো-৩ এই টমেটো কিছুটা লম্বাটে ও চ্যাপ্টা এবং গায়ের রং গারো লাল হয়ে থাকে। প্রতি গাছে ৩০ থেকে ৪০ টি করে ফল ধরে। প্রতি গাছে ফলন ধরে দুই থেকে তিন কেজি,বারি হাইব্রিড টমেটো-৪ এই টমেটো গোলাকৃতি হয় এবং ফলের রং হয় গাড়ো লাল। প্রতি গাছে ৩০ থেকে ৩৫ টি ফল ধরে। প্রতি গাছে ফল হয় দুই থেকে তিন কেজি।

বারি হাইব্রিড টমেটো-৮ এই টমেটো কিছুটা চ্যাপ্টা গোলাকার এবং ফলের রং লাল। প্রতি গাছে 40 থেকে 45 টি ফল ধরে। প্রতি গাছের ফলন দেয় ২-২.৫০ কেজি।বারি হাইব্রিড টমেটো-৮ এই টমেটোটি কিছুটা লম্বাটে ফলের রং হালকা লাল। প্রতি গাছে 35 থেকে 40 টি ফল ধরে। ২-২.৫০ কেজি ফল পাওয়া যায়।

শীতকালীন টমেটো পলিথিনের ছাউনিতে চাষ করা হয়। একটি ছাউনি  ২০ মিটার*২.৩ মিটার আবৃতি হলে ভালো। ৩০ সেন্টিমিটার চওড়া দুটি বীজতলা লম্বালম্বি একটি করে ফানি ব্যবস্থা করে নিতে হবে। ছাউনি খুঁটি উভয় পাশে উচ্চতা ১৫০ সেন্টিমিটার এবং মাঝখানে খুঁটির উচ্চতা ২১০ সেন্টিমিটার হতে হবে। দুটি ছাউনির মাঝে মাঝে 75 cm চওড়া পানি নিষ্কাশন এর জন্য নালা রাখা হয়। প্রতি ছাউনিতে দুইটি রাখতে হবে।

টবে টমেটো চাষ পদ্ধতি

টমেটো সাধারণত বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। কিন্তু অনেকেই শখের বসে বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় টবে টমেটো গাছ লাগিয়ে পারিবারিক চাহিদা পূরণ করে। টবে টমেটো গাছ লাগালে অল্প পরিশ্রম এবং অল্প সারে অনেক টমেটো পাওয়া যায়। তাহলে চলুন টবে টমেটো চাষের পদ্ধতি বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা যাক-

গ্রীষ্মকালীন-টমেটো-চাষ-পদ্ধতি-ও-পরিচর্যা-বিস্তারিত-জানুনটব বলতে সাধারণত আমরা বড় পাত্র , বস্তা, বা কন্টেইনার বুঝে থাকি। তবে মনে রাখতে হবে একটি টবে একটি টমেটো চারা লাগাতে হবে বেশি লাগালে সঠিকভাবে গাছের পরিচর্যা হবে না আর আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে না। টবে বা ছাদে টমেটো গাছ লাগালে যে কোন মাটিতেই টমেটো গাছ হয়। তবে দোআশ বা বেলে দোআশ মাটিতে টমেটো গাছ ভালো জন্য।

আরো পড়ুনঃঅ্যালোভেরা চাষের জন্য মাটির বৈশিষ্ট্য সেরা ১০টি কোশল

টমেটো সাধারণত সেপ্টেম্বর মাস থেকে অক্টোবর  মাসের মধ্যে বীজ বুনতে হয়। এবং অক্টোবর মাস অথবা নভেম্বর মাসে এই বীজ থেকে চারা রোপন করা যায়। বীজ বোনা থেকে শুরু করে গাছের প্রথম ফল পাকা পর্যন্ত কমপক্ষে ১০০ দিন লাগে এবং ফলধারণ জাতভেদে ৩০-৬০ দিন স্থায়ী হয়।টমেটো গাছ রোপনের ক্ষেত্রে টবের মাটি তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে চারা গাছগুলোকে এক একটি পাত্রে আলাদা আলাদা ভাবে লাগাতে হবে।

এবং খেয়াল রাখতে হবে গাছে যেন পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকে। টমেটো গাছ মাটি থেকে প্রচুর পুষ্টি উপাদান শুষে নেয়। তাই গাছে নিয়মিত পানি দিতে হবে। তবে অতিরিক্ত পানি দেবেন না। এতে গাছের গোড়া পচে যাবে। যখন টমেটোর বীজ থেকে অঙ্কুরিত গাছ এক ইঞ্চি সমপরিমাণ হবে তখন বীজ টি তুলে অন্য টবে লাগাতে হবে। এবং খেয়াল রাখতে হবে যেন একটি টবে দুইটি গাছ না লাগানো হয়।

টমেটোর গাছে সাধারণত জৈব সার বেশি ব্যবহার করা উত্তম। জৈব সারের মধ্যে গোবর, ছাই, কম্পোস্ট সার, রান্নাঘরের সবজির খোসা, ডিমের খোসা, খোলের জন্য ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া আপনি ইউরিয়া, টি এস পি স্যার ব্যবহার করতে পারেন। গাছে পোকামাকড়ের উপদ্রব দেখতে পেলে সাবান পানি মিশ্রিত গাছের ওপর স্প্রে করে দিন অথবা গাছের উপরে সাই ছিটিয়ে দিন এতে পোকা চলে যাবে।

তাছাড়া গাছ একটু বড় হলে খুঁটির সাথে বেঁধে দিতে পারেন। কেননা গাছ নেতিয়ে পড়লে গাছের তল থেকে পোকার আক্রমণ হতে পারে। খুঁটিতে বাধার সময় নিচের ডাল গুলো ছেটে দিতে পারেন। এতে ফলন ভালো হবে। টবের গাছে ২-৩ দিন পর পর নিড়ানি দিয়ে দিতে হবে যেন মাটি চাপা লেগে না থাকে। যখন ফল ধরা শুরু হবে তখন গাছের গোড়া শুকনো রাখার চেষ্টা করুন। 

শীতকালীন টমেটো চাষ পদ্ধতি

টমেটো হল শীতকালীন সবজি।শীতকালীন টমেটো চাষ বাংলাদেশে অত্যন্ত লাভজনক একটি ফসল। সঠিক সময়ে বীজ বপন, জমি প্রস্তুতি ও পরিচর্যা করলে শীতকালে টমেটো থেকে ভালো ফলন ও মুনাফা পাওয়া যায়। শীতকালের জন্য ঠান্ডা সহনশীল, ফল বড় ও বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায় এইরকম ফসল চাষ করতে হবে। যা গুলো হল বারি টমেটো-২, বারি টমেটো-৩,বারি টমেটো-৪ , মানিক ,রতন,অর্পৃব ইত্যাদি।

সারা বছর চাষের উপযোগী জাত। বছরের যেকোন সময় টমেটোর বীজ বুনলে চারা ও সেসব চারা রোপণ করলে গাছ হয়, এমনকি সেসব গাছে ফুলও আসে। কিন্তু সব জাতের গাছে ফল ধরে না। এজন্য সারা বছর চাষের উপযোগী জাত যেমন, বারি টমেটো-৬ (চৈতী) চাষ করা যায়।

টমেটো চাষ করা হয় চারা তৈরি করে। এজন্য বীজতলায় বীজ বুনে সেখানে চারা তৈরি করে নিতে হয়। টমেটো চাষে সফলতার জন্য কেনা বীজ বা ঘরে রাখা বীজ প্রথমে শোধন করে নিতে হবে। সম্ভব হলে বীজতলায় বোনার আগে অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা করে নেয়া উচিত। একবার ফেলার পর বীজতলায় সেসব বীজ না গজালে বা কম গজালে কিংবা গজানো চারা রোগগ্রস্ত হলে ক্ষতি হবে।

টমেটো বীজ বাজার থেকে কিনে আনলে তাতে রোগ জীবাণু থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই বীজ বোপনের আগে বীজ বিশোধন করে নিতে হয়।বিজ শোধনের কয়েকটি  ধাপ রয়েছে। গরম পানি দিয়ে বীজ শোধন করা যায়। ৫০০ সেন্টিগ্রেটেড তাপমাত্রাই টমেটোর বীজ ভিজিয়ে রাখলে গায়ে লেগে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু মরে যাবে। ভেজানো বীজ গুলো শুকিয়ে বপন করতে হবে।

তাছাড়া জমিতেও রোগ জীবাণু থাকতে পারে সে সেজন্য মাটিকে জন্য জীবাণমুক্ত করে নিতে হবে। মাটি দুই তিনটা চাষ দিয়ে তাতে জৈব সার মিশিয়ে পলিথিন দিয়ে ১৫ থেকে ২০ দিন ঢেকে রাখতে হবে। এতে করে সূর্যের তাপে রোগ জীবাণু বা রোগ জীবাণু ছড়ানো পোকামাকড় সূর্যের তাপে মরে যাবে। তাছাড়া সময় কম থাকলে জমিতে কাঠের গুড়া বিছিয়ে দিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দিলে সে আগুনের তাপে পোকামাকড় মরে যাবে।

বারি ৮ টমেটো চাষ পদ্ধতি

গ্রীষ্মকালীন বা বর্ষাকালীন সময়ে টমেটো চাষ করার জন্য একমাত্র ভরসার বীজ হলো বারি ৮ টমেটো। এই টমেটো গাছটিতে গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ টি টমেটো ধরে। এই জাতটি সারা বছর আবাদ করা যায়। বারি ৮ টমেটো বাম্পার ফলন দেওয়ায় কৃষকের আস্থা অর্জন করেছে। বারি ৮ উচ্চফলনশীল টমেটো জাত।

এজাতের প্রতিটি গাছে ২৫-৩০টি ফল ধরে।চারা লাগানোর ৮০-৮৫দিনের মধ্যে ফল পাকতে শুরু করে।প্রতিটি ফলের ওজন ১০০-১১৫গ্রাম।ফলের রঙ হালকা লাল। ফল মাংসল এবং ফলের ত্বক অত্যন্ত পুরু ও শক্ত।সংগৃহীত পাকা ফল ঘরের তাপমাত্রায় ১৫-২০দিন সংরক্ষণ করা যায়।গাছ প্রতি ফলন ২.৫- ৩.০।

বারি ৮ টমেটো চাষ করতে উঁচু থেকে মাঝারি উচু জমিতে এবং পানি নিষ্কাশিত জমিতে ভালো টমেটো জন্মে। মাটির ক্ষেত্রে দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ ভালো ফলন হয়। জমিতে চারা লাগানোর সময় চারার বয়স কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ দিন হতে হবে। লাইন থেকে লাইন দূরত্ব ২৪ সেমিঃ এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব ১৬ সেন্টিমিটার। গ্রীষ্মকালীন বারি ৮ লাগানোর সময় সেপ্টেম্বর-অক্টোবর। এই জাতের গাছে নেতিয়ে পড়া বা ধসা রোগ দেখা দেয়।চারা লাগানোর 80 থেকে 85 দিন পর ফল  তোলা যায়। 

টমেটো গাছের পরির্চযা

টমেটো শীতকালীন ফসল হলেও এখন সারা বছর টমেটো চাষ হয়ে থাকে। টমেটো যেমন খাবারের স্বাদ বাড়ায় ঠিক তেমনি টমেটো গাছের পরিচর্যা দরকার পড়ে। কথায় আছে যত্ন করলে রত্ন মিলে। তাই যেকোনো জিনিসের পরিচর্যা ঠিকমতো করলে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব। টমেটো গাছের পরিচর্যা বিষয়ে আলোচনা করব আর্টিকেল এর মাধ্যমে। তাহলে চলুন টমেটো গাছের পরিচর্যা বিস্তারিত আলোচনা করি-

গ্রীষ্মকালীন-টমেটো-চাষ-পদ্ধতি-ও-পরিচর্যা-বিস্তারিত-জানুন

আরো পড়ুনঃঅর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও অপকারিতা

টমেটো গাছের ফলন বেশি পেতে হলে মাটি বাছাই করে নিতে হবে। দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটিতে ভালো টমেটোর গাছ হয়। মাটিকে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। জীবাণু মুক্ত করার জন্য চাষ দিয়ে জৈব সার মিশিয়ে পলিথিন দিয়ে ১৫ দিন ঢেকে রাখতে হবে। সূর্যের তাপে রোগ জীবাণু মরে যাবে। তাছাড়া আপনি কাঠের গুড়ি বিছিয়ে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিলে আগুনের তাপে জীবাণু মারা যাবে।

ভালো ফলন পেতে হলে বীজ শোধন করে নিতে হবে। বীজ শোধন করতে ৫০০ সেন্টিগ্রেটেড গরম পানিতে বাইশ থেকে চব্বিশ ঘন্টা বীজগুলো ভিজিয়ে রাখতে হবে। এতে বীজের গায়ে লেগে থাকা জীবাণু মরে যাবে। পরে বীজ শুকিয়ে লাগাতে হবে। প্রথমে বীজগুলো একটি জমিতে রোপন করতে হবে। ২৫ থেকে ৩০ দিন বীজ থেকে অঙ্কুরিত চারা মূল জমিতে লাগালে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

জমিতে কীটনাশক ব্যবহার না করে জৈব সার ব্যবহার করুন। জৈব সারের মধ্যে কম্পোস্ট সার, ছাই, গোবর ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। ইউরিয়া, টিএসপি এই সারগুলো প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহার করুন। ৮০ থেকে ৮৫ দিনের মধ্যে ফসল বাজারজাত করা হয়। টমেটো গাছের রোগ হল ঢলে পড়া রোগ, ধসা রোগ, এবং জাব পোকার উপদ্রব দেখা দেয়। এগুলো থেকে রক্ষা পেতে সাবান পানি স্প্রে করে গাছ ভিজিয়ে দিতে পারেন। এতে প্রকার উপদ্রব অনেকটা কম হবে।

শেষ কথাঃ গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ পদ্ধতি

টমেটো আমাদের সবার পছন্দের একটি সবজি। শীতকালীন এই সবজি সচরাচর বাজারে থাকলেও গ্রীষ্মকালে এর দেখা মেলা ভার। কিন্তু বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গুলো  প্রায় ৫০ প্রজাতির টমেটো উদ্ভাবন করেছে। অধিক তাপ সহনশীল টমেটোর বীজ যা গ্রীষ্মকালেও ব্যাপক হারে চাষ করে জনগণের চাহিদা পূরণ করছে।

প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ পদ্ধতি এবং গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের জাত নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনি আপনার বাসার  ছাদে বা আঙিনায় টমেটো চাষ করে পরিবারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাজারজাত করে লাভবান হতে পারবেন। পোস্টটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে বন্ধু বান্ধবের কাছে শেয়ার করবেন। এবং কোন কিছু জানার থাকলে টুকুস করে কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করবেন। আপনার বক্তব্য আমাদের কাছে অনেক মূল্যবান। ধৈর্য সহকারে পোস্টটি পড়ার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফকটেক ২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url